বহু প্রতীক্ষিত ব্রডগেজ ট্রেন পুরোপুরি চালু করা ছাড়াও নতুন লাইনে যাত্রীদের দাবিদাওয়া নিয়ে বৈঠক হয়ে গেল সোমবার। হাওড়া ডিআরএম কার্যালয়ে ডিভিশনাল রেলওয়ে ইউজার্স কনসালটেটিভ কমিটির (হাওড়া ডিভিশন) ১৬০তম বৈঠকে আহমেদপুর-কাটোয়া ও বলগোনা-কাটোয়া ব্রডগেজ লাইনে বেশ কিছু নতুন স্টেশন চালু, ভোর থেকে ট্রেনের দাবিও ওঠে। বৈঠকে ছিলেন কমিটির চেয়ারম্যান তথা পূর্ব রেলের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার মনু গোয়েল, কমিটির সম্পাদক তথা সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার ডি সি প্রধান-সহ নয় সদস্য।
বৈঠকে আহমেদপুর-কাটোয়া ৫১.৯২ কিলোমিটার নির্মীয়মাণ ব্রডগেজ লাইনে নিরোলগ্রাম হল্ট ও বীরভূমে মহেশপুর হল্ট নামে দুটি নতুন স্টেশন তৈরির দাবি তোলেন সদস্যরা। ন্যারোগেজ থাকাকালীনই ১১ বছর আগে কম টিকিট বিক্রির দরুণ লাভ কমে যাওয়ায় বন্ধ করা হয়েছিল স্টেশন দুটি। সদস্য আশিস রায় দাবি করেন, নিরোলগ্রাম হল্ট স্টেশন থেকে সতীপীঠ অট্টহাস মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে। বছরভর তীর্থযাত্রীদের ভিড় ছাড়াও সেপ্টেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত চড়ুইভাতির জন্য অট্টহাসে ভিড় হয় ভালই। ফলে হল্ট স্টেশন চালু হলে লোকসান হবে না বলে তাঁর দাবি। লাইন চালু হওয়ার পরে বিষয়টি নিয়ে ভাবনার আশ্বাস দেওয়া হয় রেলের তরফে।
আহমেদপুর-কাটোয়া ব্রডগেজ লাইন বৈদ্যুতিকরণের দাবি, আহমেদপুর জংশনে হাওড়া-গয়া এক্সপ্রেসের স্টপেজ, নিরোল হল্ট স্টেশনের নামের বাংলা বানান ঠিক করা, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য স্টেশনগুলিতে এলইডি ও সৌরশক্তি চালিত আলোর ব্যবস্থা, আহমদপুর জংশনে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএম কাউন্টার চালু, নিরোল হল্ট স্টেশনে শিশুদের পার্ক তৈরিরও দাবি জানানো হয়। আশিসবাবু বলেন, ‘‘নিরোল হল্ট স্টেশনে রেলের বেশ খানিকটা জায়গা ফাঁকা পড়ে রয়েছে। সেখানে পার্ক হলে স্থানীয়দেরই সুবিধা হবে।’’ আহমেদপুর থেকে ভোর ৪.২০ তে একটি লোকাল ট্রেন চালু ও কাটোয়া থেকে ভোরে রামপুরহাট, কীর্ণাহার, দুমকা, দেওঘর হয়ে জসিডি পর্যন্ত একটি লোকাল ট্রেন চালুরও প্রস্তাব দেওয়া হয়। অনেকগুলো পর্যটন কেন্দ্রের উপর দিয়ে যাওয়ায় এই ট্রেন জনপ্রিয় ও লাভদায়ক হবে বলে দাবি আশিসবাবুর। তিনি বলেন, ‘‘১৯১৭ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর আহমেদপুর-কাটোয়া ন্যারোগেজ ট্রেন চালু হয়েছিল। একশো বছর পরে একই তারিখে যদি ওই লাইনে ব্রডগেজ চালু করা যায় তা ঐতিহাসিক হবে।’’
গত ২৫ অগস্ট থেকে বলগোনা থেকে শ্রীপাট শ্রীখণ্ড পর্যন্ত একটিই ট্রেন আপ-ডাউনে চলছে। বর্ধমান থেকে বলগোনা পর্যন্ত চলা ছ’টি ট্রেন যাতে শ্রীখণ্ড পর্যন্ত চালু করা যায় সেই দাবিও ওঠে। তবে রেকের সমস্যার জন্য এখনই একটির বেশি ট্রেন দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেন কর্তারা।