কাটোয়ায় মন্দির চত্বরে বসানো হয়েছে বিদ্যুতের বক্স। —নিজস্ব চিত্র।
সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য মন্দির অধিগ্রহণ করেছে পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগ। তার পরেও প্রাচীন টেরাকোটার মন্দির চত্বরে বিদ্যুতের বক্স লাগিয়ে তা দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে কাটোয়ার শ্রীবাটিতে। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অভিযোগ জানিয়েও সুরাহা হয়নি বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।
কাটোয়া ২ ব্লকের শ্রীবাটিতে ভোলানাথ, চন্দ্রেশ্বর ও শঙ্কর শিবের তিনটি প্রাচীন টেরাকোটার মন্দির রয়েছে। আঞ্চলিক ইতিহাস গবেষকদের দাবি, ১২৪৬ সালে স্থানীয় চন্দ্রবংশীয়েরা মন্দিরগুলি তৈরি করেছিলেন। ছয় শতক জায়গায় ওই মন্দিরগুলিতে পৌরাণিক নানা দৃশ্যের পাশাপাশি টেরাকোটায় লৌকিক জীবনের ছবি রয়েছে। মহকুমার অন্যতম দ্রষ্টব্য স্থান এই মন্দিরগুলি।
শ্রীবাটি পঞ্চায়েত জানায়, মন্দির তিনটি বছর তিরিশ আগে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নেয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ। বছর দুয়েক আগে মন্দির ঘিরে মেঝে তৈরি করে কিছু সংস্কার করে তারা। আচমকা বছর দুয়েক আগে মন্দির চত্বরে একটি মিটার বক্স বসানো হয়। পঞ্চায়েতের দাবি, ওই বক্সটি থেকে কোনও আলো জ্বলে না। শুধু দখলদারির জন্যই এই বক্সটি বসানো হয়েছে বলে অভিযোগ। পঞ্চায়েতের উপপ্রধান জগন্নাথ রুদ্র দাবি করেন, ‘‘ওই বক্সের সঙ্গে কোনও বিদ্যুৎ সংযোগকারী তার নেই। আমাদের ধারনা, চন্দ্র বংশের ১৫ শরিকের কেউ এই কাজ করেছেন।’’
মন্দির দখলদারি রুখতে ইতিমধ্যে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা ও প্রশাসনকে জানানো হয়েছে বলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানান। জগন্নাথবাবুর আরও অভিযোগ, ‘‘মন্দিরগুলির দেওয়ালে কেউ পেরেক পুঁতে দিয়েছে।’’ তাঁর দাবি, মন্দিরের চূড়াগুলি ভেঙে বর্ষাকালে বৃষ্টির জল চুঁইয়ে ভিতরে পড়ে। উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণের অভাব রয়েছে। পূর্ত দফতরের কাটোয়া ডিভিশনের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার কৃষ্ণেন্দু দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের নির্দেশমতো গ্রিল দিয়ে মন্দির ঘেরা হয়েছে। ওই দফতর থেকে যেমন নির্দেশ দেওয়া হবে, সে ভাবেই সংস্কারের কাজ হবে।’’
পঞ্চায়েত প্রধান সাগর প্রধানের দাবি, দখলদার আটকে মন্দিরের পাশের জায়গা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর অধিগ্রহণের নির্দেশ দিলে সেখানে অতিথিশালা ও শৌচাগার তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। তবে বিষয়টি তাঁর জানা নেই বলে জানান মহকুমাশাসক সৌমেন পাল। খোঁজ নিয়ে দেখা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।