মহকুমাশাসকের কার্যালয়ের সামনে চলছে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে সরকারি প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে বিক্ষোভ দেখালেন পূর্বস্থলী ১ ব্লকের নাদনঘাট এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, দুর্নীতির প্রতিবাদ করলেই জুটছে মার। সঙ্গে এলাকার একটি সমবায় সমিতিতেও গত দু’বছর আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা।
দিন পাঁচেক আগে থেকে নাদনঘাট বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। চলে বোমাবাজি। পুলিশ ৩৬ জনের নামে মামলা দায়ের করে। ন’জনকে গ্রেফতারও করা হয়। রবিবারও পুলিশ নিরীহ লোকজনদের বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে এবং পঞ্চায়েতে সরকারি প্রকল্প নিয়ে দুর্নীতি হচ্ছে এই দাবিতে এই পঞ্চায়েতের অর্জুনপুকুর এলাকার বাসিন্দারা নবদ্বীপ-বর্ধমান রোডে পথ অবরোধ করেন।
এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ, গত পাঁচ বছর ধরে বাংলা আবাস যোজনা, একশো দিনের কাজ-সহ নানা প্রকল্পে দুর্নীতি হয়েছে। প্রশাসনকে লিখিত ভাবে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। সম্প্রতি প্রকল্পের সুপার ভাইজার, প্রধানের কয়েকজন অনুগামীদের কাছে গত পাঁচ বছরে কোন প্রকল্পে কত টাকা খরচ হয়েছে তার হিসাব চাওয়া হয়। অভিযোগ, হিসেব না দিয়ে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয় তাঁদের। বিক্ষোভকারীদের দাবি, বর্তমান পঞ্চায়েত প্রধান আগে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সভাপতি ছিলেন। তাঁর মদতেই চলত পঞ্চায়েত। যদিও নাদনঘাট পঞ্চায়েতের প্রধান খয়রাত আলি সাহানার দাবি, ‘‘মাস তিনেক হল পঞ্চায়েতে কাজ শুরু করেছি। এখনও বড় কোনও প্রকল্পের কাজ শুরু হয়নি। দুর্নীতির অভিযোগ ঠিক নয়।’’ এলাকার কিছু লোকজন পরিকল্পিত ভাবে অশান্তি ছড়াচ্ছে বলেও তাঁর দাবি।
বিক্ষোভকারী দস্তাগীর সাহানা, বাসিদুল সাহানাদের দাবি, ‘‘সহায়ক মূল্যে চাষিদের ধান কেনা হয়েছে বলে এলাকার একটি সমবায় খাতায় কলমে দেখিয়েছে। আসলে ব্যবসায়ীদের কাছে ধান কিনে সমবায় সমিতি তা বিক্রি করেছে।’’ ওই সমবায়ের ২০১৬-১৭ সালের মাস্টার রোল পরীক্ষা করলেই প্রকৃত সত্য সামনে আসবে বলেও তাঁদের দাবি। এ দিন ওই সমবায়ের বিরুদ্ধে মহকুমাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগও করেন তাঁরা। যদিও অভিযুক্ত সমবায়ের দাবি, যে দুবছর ধান কেনা হয়েছে তার সঠিক হিসাব দেওয়া হয়েছে।
কালনার মহকুমাশাসক নীতিশ ঢালি বলেন, ‘‘এর আগে সমবায়টিকে নিয়ে দুটি অভিযোগ পেয়েছিলাম। একটিতে গণসাক্ষর করে দুর্নীতির অভিযোগ করেছিলেন কিছু মানুষ। আর একটিতে অভিযোগ পত্রে অনেকের সই জাল করা হয়েছে বলে জানানো হয়। দুটি অভিযোগেরই তদন্ত শুরু হয়েছে। পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগও খতিয়ে দেখা হবে।’’