হাসপাতালে এক শয্যায় গাদাগাদি রোগীদের

দু’দিন আগেই বাঙ্গুর হাসপাতালে বিছানা থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে এক রোগিণীর। অভিযোগ ছিল, হাসপাতালের গাফিলতিতেই ওই ঘটনা ঘটেছে। বর্ষায় হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ায় একই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালেও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:০৬
Share:

নানা বিভাগে দেখা যাচ্ছে এই রকম দৃশ্যই। —ফাইল চিত্র।

দু’দিন আগেই বাঙ্গুর হাসপাতালে বিছানা থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে এক রোগিণীর। অভিযোগ ছিল, হাসপাতালের গাফিলতিতেই ওই ঘটনা ঘটেছে। বর্ষায় হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ায় একই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালেও। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু শয্যায় দু’জনের বেশি রোগী রাখা হয়েছে। ফলে, যে কোনও সময় পড়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

Advertisement

শহরে বেশ কিছু সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল থাকায় দুর্গাপুর হাসপাতালে রোগীর চাপ অন্য মহকুমা হাসপাতালের চেয়ে কম। সরকারি হাসপাতালে বিছানার অভাবে বারান্দায় রোগীদের শুয়ে থাকার ছবি এখানে তেমন দেখা যায় না। তবে সোমবার হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, চেনা ছবিটা আমূল বদলে গিয়েছে। পুরুষদের মেডিক্যাল বিভাগে একাধিক শয্যায় দু’জন, এমনকী তিন জন রোগীকেও দেখা গিয়েছে। সার্জিক্যাল ওয়ার্ডেও দু’একটি শয্যায় একের জায়গায় দু’জন রোগীকে দেখা গিয়েছে। মহিলা বিভাগে কিছু শয্যায় দু’তিন জনকে জায়গা দেওয়া হয়েছে।

কেন এই পরিস্থিতি? হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শয্যার সংখ্যা যেখানে ৩৩০ সেখানে দৈনিক প্রায় পাঁচশো রোগী চিকিৎসার জন্য আসছেন। আদালতের নির্দেশ আছে, হাসপাতাল কোনও রোগীকে ফেরাতে পারে না। ফলে সবাইকেই জায়গা করে দিতে গিয়ে এমন অবস্থা। কিন্তু পরিস্থিতির সঙ্গে আপোস করতে গিয়ে কি চিকিৎসার মান কমছে না? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘একটু সমস্যা তো হচ্ছেই। তবে ‘ম্যানেজ’ করে নিতে হচ্ছে। কিছু করার নেই।’’ চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, বর্ষায় জ্বর, পেটের অসুখ, সাপে কাটা রোগীর সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে।

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁচটি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে নিয়মিত রোগী ‘রেফার’ করা হয় এই হাসপাতালে। কারণ, ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে রোগী ভর্তি রেখে চিকিৎসা করানোর মতো পরিকাঠামো নেই। আবার অনেক ক্ষেত্রে রোগীর পরিজনদের চাপেও ‘রেফার’ করা হয় রোগীকে। অহেতুক ‘রেফার’ রুখতে কয়েক বছর আগে ‘রেফারেল রেজিস্টার’ রাখার নিয়ম চালু হয় হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে। কাউকে রেফার করতে হলে নির্দিষ্ট ভাবে সেখানে কারণ উল্লেখ করতে হতো। কিন্তু এখন আর তা সেভাবে মানা হয় না। সঠিক ভাবে নিয়ম মানা হচ্ছে কি না বা নিয়ম ভাঙলে কি ব্যবস্থা নেওয়া যাবে তা দেখার কেউ নেই বলে অভিযোগ।

মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, কোনও কোনও বিভাগে রোগীর চাপ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় দ্রুত চিকিৎসা শুরু করার জন্য এক শয্যায় দুই বা তিন জনকে জায়গা করে দিতে হচ্ছে ঠিকই, তবে শয্যা ফাঁকা হলেই তাঁদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। হাসপাতাল সুপার দেবব্রত দাস বলেন, ‘‘মহকুমা হাসপাতাল হিসাবে পর্যাপ্ত পরিকাঠামো থাকা সত্বেও রোগীর চাপ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় সাময়িক একটা সমস্যা হচ্ছে। আশা করি দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement