Durgapur Hospital Agitation

দুর্গাপুরে প্রসূতির মূত্রথলি কেটে ফেলার অভিযোগ! মৃত্যুর পর হাসপাতালে শুরু বিক্ষোভ, উত্তেজনা

দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে সন্তানপ্রসবের পর মৃত্যু হয়েছে তরুণীর। অভিযোগ, ভুল চিকিৎসা করা হয়েছে তাঁর। অস্ত্রোপচারে গাফিলতি হয়েছে বলেও অভিযোগ পরিজনদের।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০:০৩
Share:

প্রসূতির মৃত্যুর পর দুর্গাপুরের হাসপাতালে উত্তেজনা। —নিজস্ব চিত্র।

প্রসবের পর তরুণীর মূত্রথলি কেটে ফেলার জেরে মৃত্যু! ভুল চিকিৎসায় প্রাণহানির অভিযোগে শনিবার রাতে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান মৃতার পরিজনেরা। তার জেরে হাসপাতালে উত্তেজনা ছড়ায়। মৃতা তরুণীর পরিজনদের অভিযোগ, জুনিয়র ডাক্তারদের দিয়ে প্রসব করানোর ফলে এই বিপত্তি। রাতে হাসপাতাল চত্বরেই তাঁরা অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন। কর্তৃপক্ষের কাছে জবাবদিহি চেয়েছেন তাঁরা। দাবি করা হয়েছে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণেরও। মৃতার নাম ইশরত জাহান (২৮)। তিনি দুর্গাপুরের বেনাচিতির মসজিদ মহল্লা এলাকার বাসিন্দা।

Advertisement

গত ২০ সেপ্টেম্বর প্রসবের জন্য শোভাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছিল। ২১ তারিখ তিনি সন্তান প্রসব করেন। অভিযোগ, সেই সময়েই ডাক্তারেরা ভুল অস্ত্রোপচার করে প্রসূতির মূত্রথলি কেটে ফেলেছিলেন। মৃতার পরিবারের সদস্যেরা জানিয়েছেন, এর পর থেকেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নানা টালবাহানা করতে থাকেন। কখনও বলা হয়, তরুণীর কিডনিতে সমস্যা হয়েছে, কখনও বলা হয় তাঁর রক্তচাপ এবং রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গিয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, গাফিলতি আড়াল করতেই এই ধরনের অজুহাত দেওয়া হয়েছিল। শনিবার সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। তার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁর আত্মীয়েরা।

তরুণীর মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে রোগীর পরিবার এবং এলাকার বাসিন্দারা জড়ো হন বলে অভিযোগ। হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখানো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে তাদের সঙ্গেও ধস্তাধস্তি হয় রোগীর আত্মীয়দের। মৃতার দাদা ফিরোজ আলি বলেন, ‘‘আমার বোনকে ভুল চিকিৎসা করে ওরা মেরে ফেলেছে। নিজে পায়ে হেঁটে বোন হাসপাতালে এসেছিল। গত শনিবার অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু তার পরেই পেট ফুলে গিয়েছিল। বোন সুস্থ ছিল। হাসপাতাল থেকে বলা হল, ওর নাকি কিডনি ফেল করেছে। প্রেশার, সুগার হাই হয়ে গিয়েছে। কী করে এটা হয়? ওদের যে ভুল হয়েছে, সেটা ওরাও জানে। আমাদের কাছে স্বীকারও করেছিল। এখন মানতে চাইছে না।’’ পরিবারের সদস্যেরা জানান, তরুণীর আরও দু’টি সন্তান রয়েছে। তাঁদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

Advertisement

এই ঘটনায় মৃতার পরিবারের তরফে দুর্গাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। দুর্গাপুর থানার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘এখনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। হলে আমরা আইনানুগ পদ্ধতিতে তদন্ত শুরু করব।’’ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে গাফিলতির কথা স্বীকার করা হয়নি। তাঁদের বক্তব্য, প্রসবের পর তরুণীর শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হয়েছিল। সাধ্যমতো চেষ্টা করেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি।

উল্লেখ্য, আরজি কর-কাণ্ডের আবহে সম্প্রতি কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে রোগীমৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। রোগীর আত্মীয়দের বিরুদ্ধে হাসপাতালে ঢুকে চিকিৎসক এবং নার্সদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার পর হাসপাতালে নিরাপত্তার অভাবের কারণে আবার কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement