ফের বাস পরিষেবা চালুর দাবি উঠেছে দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেডের (ডিপিএল) টাউনশিপে। এক সময়ে দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ সংস্থার (এসবিএসটিসি) বাস চলাচল করত টাউনশিপের ভিতর দিয়ে। পরে মিনিবাস পরিষেবা চালু হয়। কিন্তু এখন টাউনশিপের বড় অংশে আর কোনও বাসই চলে না বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ডিপিএল টাউনশিপের এ, বি ও সি জোনে মোট প্রায় সাড়ে তিন হাজার আবাসন রয়েছে। এ ছাড়া টাউনশিপ লাগোয়া এলাকায় বসবাস করেন অনেকে। কাছেই রয়েছে দুর্গাপুর কেমিক্যালস লিমিটেডের (ডিসিএল) টাউনশিপ। সেখানেও বহু আবাসন রয়েছে। সব মিলিয়ে কয়েক হাজার মানুষ বসবাস করেন। বাস পরিষেবা চালু না থাকায় রেলস্টেশন, দুর্গাপুর বাজার, ব্যাঙ্ক, সরকারি অফিস, কর্মস্থল-সহ দৈনন্দিন নানা প্রয়োজনে তাঁদের যাতায়াতে সমস্যায় পড়তে হয়। এ ছাড়া সমস্যায় পড়ে ওই এলাকার পাঁচটি হাইস্কুল ও চারটি প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়ারাও।
টাউনশিপের প্রবীণ বাসিন্দারা জানান, বহু বছর আগে এসবিএসটিসি টাউনশিপের ভিতর দিয়ে বাস চালাত। দুর্গাপুর স্টেশন থেকে বাসগুলি ছেড়ে টাউনশিপের ভিতর দিয়ে মায়াবাজারে যেত ও স্টেশনে ফিরে আসত। ফলে বাজার বা স্টেশনে সরাসরি সেই বাসেই যাতায়াত করতে পারতেন বাসিন্দারা। এ ছাড়া অন্যত্র যাওয়ার দরকার পড়লে গ্যামন ব্রিজে নেমে অন্য রুটের বাস ধরা যেত। সরকারি বাস বন্ধ হয়ে গেলে ওই একই রুটে চালু হয় মিনিবাস। কিন্তু পর্যাপ্ত যাত্রী না মেলার অভিযোগে মিনিবাসগুলিও একে একে বন্ধ হয়ে যায়। দু’তিনটি মিনিবাস চলে। কিন্তু সেগুলি পুরো টাউনশিপ না ঘুরে একাংশ দিয়ে বেরিয়ে যায়। ফলে টাউনশিপের সেই অংশের বাসিন্দাদের পাশাপাশি আশিসনগরের মতো এলাকার বাসিন্দাদের বাস ধরতে অনেকখানি রাস্তা হাঁটতে হয় বলে অভিযোগ।
এই পরিস্থিতিতে অটো ও টোটোই একমাত্র ভরসা। কিন্তু টোটো বা অটোয় চড়ে যাতায়াতে বাসের তুলনায় অনেক বেশি ভাড়া গুণতে হয় বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। এ ছাড়া অটো, টোটোর জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা, জরুরি প্রয়োজনে হাতের কাছে অটো, টোটো না পাওয়ার মতো সমস্যা তো আছেই। আবার একা এক জনের পক্ষে চড়া ভাড়া দিয়ে অটো বা টোটো রিজার্ভ করাটাও সম্ভব নয়।
ডিপিএল টাউনশিপের বাসিন্দা তথা আইএনটিইউসি প্রভাবিত দুর্গাপুর প্রজেক্টস ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সম্পাদক উমাপদ দাস বলেন, ‘‘হাজার হাজার মানুষ ফি দিন সমস্যায় পড়ছেন। নিজস্ব যানবাহন না থাকলে টাউনশিপের বাসিন্দাদের বাইরে যাতায়াতে বিপাকে পড়তে হয়। ইতিমধ্যেই সংগঠনের তরফে প্রশাসনের কাছে বাস পরিষেবা চালুর দাবি জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’’ বাসিন্দারা আরও জানান, সামনেই দুর্গাপুজো আসছে। বাস পরিষেবা চালু হলে শহরের অন্যত্র পুজো দেখতে যেতেও সুবিধা হবে। প্রশাসন ও বাস মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয় ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শশাঙ্কশেখর মণ্ডল।