মঙ্গলবার রামনগর কোলিয়ারির জিএম কার্যালয়ের সামনে চলছে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
অবৈধ কয়লা খননের জেরে ‘বিপন্ন’ গ্রাম। কয়লার এই অবৈধ কারবারে বাধা দিতে গেলে কয়লা চোরদের হামলার মুখে পড়তে হচ্ছে। পশ্চিম বর্ধমানে ইস্কোর রামনগর কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষকে অবৈধ খনিমুখ বন্ধের আর্জি জানিয়েও লাভ হচ্ছে না। এমনই অভিযোগে কুলটির এই কোলিয়ারির লায়েকডিহি ‘সিম’-এ (সঞ্চিত কয়লার স্তর) মঙ্গলবার বিক্ষোভ-অবস্থান শুরু করলেন বাসিন্দাদের একাংশ। বিক্ষোভ দেখান কোলিয়ারির কর্মীদের একাংশও। ঘেরাও করা হয় কোলিয়ারির ভারপ্রাপ্ত জিএম সুমিত দাঁ-সহ অন্য কর্তাদের।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সোমবার রাতে প্রায় পঞ্চাশ জন ‘কয়লা চোর’-এর একটি দল বাসিন্দাদের মারধর করেছে। আক্রান্ত হন ওই গ্রামের বাসিন্দা তথা কোলিয়ারির কয়েকজন কর্মী। বিক্ষোভরত বাসিন্দাদের তরফে হারাধন ঘোষ বলেন, ‘‘কয়েকদিন ধরেই আমরা অবৈধ খনিমুখ বন্ধের দাবি জানাচ্ছিলাম। সোমবার খনি কর্তৃপক্ষ কয়েকটি খনিমুখে মাটি ভরাট করেছেন। তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে চোরেরা গ্রামের কয়েকজনকে মারধর করে।’’ এর প্রতিবাদেই এ দিনের বিক্ষোভ।
খনি সূত্রে জানা গিয়েছে, রামনগর গ্রামটি রামনগর ‘সিম’-এর উপরে রয়েছে। সেখানে ‘ভূগর্ভস্থ খনন’ করে সমস্ত কয়লা তুলে ফেলা হয়েছে। গ্রামটিকে ধস থেকে বাঁচানোর লক্ষ্যে মাটির উপরের অংশ ধরে রাখতে খনিগর্ভে বড়বড় কয়লার স্তম্ভ রাখা হয়েছে। খনি সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি রামনগরের লায়েকডিহি ‘সিম’-এ একটি খোলামুখ খনি বানানো হয়েছে। রাতের অন্ধকারে সেই খনির দেওয়াল কেটে অবৈধ খনিমুখ বানিয়ে কয়লা চোরেরা বন্ধ হওয়া পুরনো ভূগর্ভস্থ খনিতে ঢুকে সেখানে থাকা কয়লার স্তম্ভগুলি কেটে ফেলছে বলে অভিযোগ। ফলে, যে কোনও দিন বড় ধস নামার আশঙ্কা করছেন বাসিন্দারা।
বিক্ষোভকারীরা সমস্ত অবৈধ খনিমুখ বন্ধ এবং এলাকায় নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন। কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিলেও মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত বিক্ষোভ ওঠেনি। গ্রামবাসী জানান, অবৈধ খনিমুখ পুরোপুরি বন্ধ না করা পর্যন্ত কাজ চালু করতে দেওয়া হবে না। ভারপ্রাপ্ত জিএম সুমিতবাবু বলেন, ‘‘দ্রুত পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ তবে কুলটি থানার দাবি, রাত পর্যন্ত গ্রামবাসী ও কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষ, কোনও পক্ষই অভিযোগ করেননি। খনি কর্তৃপক্ষ জানান, বিক্ষোভের জেরে এ দিন ওই ‘সিম’-এ সকাল থেকে কয়লা উত্তোলন করা যায়নি। তবে কয়লা পরিবহণে সমস্যা হয়নি।