দুর্গাপুরে উত্তরপল্লির এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ঘিরে বিতর্ক। —নিজস্ব চিত্র।
অঙ্গনওয়াড়িতে পুষ্টিকর খাবার মিলছে না, দুর্গাপুরের এমএএমসি মামরা বাজার লাগোয়া উত্তরপল্লির একটি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ অভিভাবকদের। এই পরিস্থিতিতে তাঁদের অনেকেই শিশুদের কেন্দ্রে পাঠাচ্ছেন না। কেউ কেউ আবার বাড়ি থেকে খাবার সঙ্গে দিয়ে পাঠাচ্ছেন বলেও দাবি করেছেন।
এই কেন্দ্রগুলিতে অন্তঃসত্ত্বা, প্রসূতি ও শিশুদের পুষ্টিকর খাবার দেওয়া হয়। নিউ টাউনশিপ থানা এলাকার এই ৫৮ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহায়িকা সোমা দত্ত জানিয়েছেন, ধার করে সামগ্রী কিনে আনতে হয়। পরে সেই বিল মঞ্জুর হলে ধার মিটিয়ে দেন দোকানে। এ ভাবেই চলে আসছে। কিন্তু জুন থেকে বিল মঞ্জুর হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘দোকানদার আর ধারে সামগ্রী দিচ্ছেন না। ফলে, নিয়ম মতো খাদ্যসামগ্রী আমরা শিশুদের দিতে পারছি না।’’
অভিভাবকদের একাংশের বক্তব্য, প্রায় তিন মাস ধরে আনাজ ও ডিম নিয়মিত মিলছে না। কোনও দিন অর্ধেক ডিম মিলছে। কোনও দিন তা-ও মিলছে না। শুধু খিচুড়ি দেওয়া হচ্ছে। অনেকে তাই বাচ্চাদের সঙ্গে বাড়ি থেকে খাবার দিয়ে পাঠাচ্ছেন। অভিভাবক কার্তির বাদ্যকর বলেন, ‘‘শুধু সামান্য ভাত খেয়ে শিশুদের প্রয়োজনীয় পুষ্টি মিলবে? তাই অনেকেই বাধ্য হয়ে বাড়ি থেকে খাবার পাঠাচ্ছেন।’’
অভিভাবকেরা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে এ বিষয়ে সিডিপিও-র দফতরে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানানো হয়েছে। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই সমস্যা সব অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রেই চলছে। জানা গিয়েছে, ৩ মাস কেন্দ্র থেকে টাকা আসেনি। তাই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে পুষ্টিকর খাদ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা তৈরি হয়েছিল। কেন্দ্র সবে টাকা পাঠিয়েছে। এ বার সমস্যা মিটবে।
তবে বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। আসানসোল সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ দত্তের দাবি, ‘‘মা ও শিশুদের পুষ্টির দিকে নজর দেওয়ার সময় কোথায় রাজ্য সরকারের? শুধু কাটমানি, তোলাবাজি নিয়েই ব্যস্ত।’’ তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, ‘‘কেন্দ্র টাকা না দেওয়াতেই তো এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা
নেওয়া হবে।’’