রবিবার রাতে ধেমোমেন এলাকায় এই জায়গাতেই ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাই হয় বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র
বাজার থেকে পাওনা টাকা নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে এক ব্যবসায়ীর রাস্তা আটকে, আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে টাকার ব্যাগ ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠল আসানসোলে। রবিবার রাতে আসানসোল দক্ষিণ থানার ধেমোমেন এলাকায় ওই ঘটনার পরে তাঁরা আতঙ্কিত বলে দাবি শহরের ব্যবসায়ীদের অনেকের। পুলিশ জানায়, দুষ্কৃতীদের খোঁজ চলছে। সীমানায় নজরদারি বেড়েছে। সোমবার রাত পর্যন্ত কেউ ধরা পড়েনি।
চিনাকুড়ির বাসিন্দা সুরেন্দ্র আগরওয়াল ধূপ, সুগন্ধী-সহ নানা সামগ্রীর ব্যবসা করেন। তিনি পুলিশে অভিযোগ করেন, রবিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ তিনি আসানসোল বাজার থেকে মোটরবাইকে বাড়ি ফিরছিলেন। সঙ্গে ছিল বাজারের দোকানদারদের থেকে আদায় করা পাওনা টাকার ব্যাগ। ধেমোমেন রেললাইন পেরোনোর ঠিক পরে,ই ডান দিক থেকে একটি মোটরবাইক তাঁকে পেরিয়ে গিয়ে সামনের রাস্তা আটকে দাঁড়ায়। সেটিতে দু’জন আরোহী ছিল। কাপড়ে মুখঢাকা এক জন নেমে এসে প্রথমে তাঁর মোটরবাইকের চাবিটি খুলে নেয়। জামার পকেট থেকে মোবাইলও কেড়ে নেয়। এর পরে রিভলভার বার করে ঘাড়ে ঠেকিয়ে টাকার ব্যাগটি তার হাতে দিতে বলে।
সুরেন্দ্রবাবুর অভিযোগ, ‘‘তখন এলাকা একেবারে ফাঁকা ছিল। চিৎকার করে কোনও লাভ নেই, উল্টে প্রাণ যাবে— এ কথা মনে করে টাকার ব্যাগটা ওদের হাতে তুলে দিই।’’ তিনি জানান, এর পরে ওই দুষ্কৃতীরা মোটরবাইকে নিয়ামতপুরের দিকে চলে যায়। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সুরেন্দ্রবাবু তাদের জানিয়েছেন, দুষ্কৃতীদের এক জন মোটরবাইকটি চালু রেখে বসেছিল। তার মুখ ঢাকা ছিল না। নম্বরহীন লাল-কালো একটি বাইকে এসেছিল তারা। বাইকের চাবি ও ফোন নিয়ে পালানোয় ঘটনাস্থল থেকে তিনি বাইকটি নিয়ে হেঁটেই নিয়ামতপুর পৌঁছন বলে জানান ব্যবসায়ী। রাতেই তিনি আসানসোল দক্ষিণ থানায় অভিযোগ করেন।
পুলিশ জানায়, অভিযোগ পেয়েই ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়। আশপাশের অঞ্চলে তল্লাশিও শুরু হয়েছে। তবে এই ঘটনায় তাঁরা আতঙ্কে ভুগছেন বলে দাবি করেন নিয়ামতপুর-বরাকরের ব্যবসায়ীরা। দুষ্কৃতীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে নিয়ামতপুর চেম্বার অব কমার্স। সংগঠনের কর্তা সচিন ভালোটিয়ার বক্তব্য, ‘‘নিয়ামতপুর, বরাকরের অনেক ব্যবসায়ী রাতে আসানসোল বাজার থেকে টাকা সংগ্রহ করে বাড়ি ফেরেন। এই ঘটনায় আমরা আতঙ্কিত।’’
নিয়ামতপুর ও বরাকরের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ফতেপুর থেকে লছিপুর পর্যন্ত অঞ্চলে জিটি রোডের দু’দিকে কোনও আলো নেই। ফলে, সন্ধ্যা নামলেই রাস্তা অন্ধকারে ডুবে যায়। বিশেষত ধেমোমেন মোড় থেকে সাতাশা পর্যন্ত অঞ্চলটি বিপজ্জনক বলে দাবি তাঁদের। আসানসোল পুরসভার কাছে ওই রাস্তায় আলো লাগানোর দাবি তুলেছেন তাঁরা।
স্থানীয় কাউন্সিলর তথা আসানসোল পুরসভার আট নম্বর বরো কমিটির চেয়ারম্যান সঞ্জয় নুনিয়া বলেন, ‘‘পুর কর্তৃপক্ষের কাছে ফতেপুর থেকে নিয়ামতপুর পর্যন্ত জিটি রোডের দু’দিকে আলো বসানোর প্রস্তাব পাঠিয়েছি। আশা করি, দ্রুত ব্যবস্থা হবে।’’