সুরক্ষা-বিধি না মেনেই খেয়া পারাপার চলছে বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র।
খেয়াঘাটে যাত্রীদের ভিড়। লঞ্চও যাতায়াত করছে ঘনঘন। কিন্তু যাত্রীদের কারও গায়ে নেই ‘লাইফ জ্যাকেট’। মঙ্গলবার কালনা খেয়াঘাটে গিয়ে এমনই ছবি দেখলেন মহকুমাশাসক (কালনা) সুমনসৌরভ মোহান্তি। বেশ কিছু সরকারি নিয়ম মানার ক্ষেত্রে খামতি রয়েছে বলে পরিদর্শন চলাকালীন ইজারাদারদের জানিয়ে দেন তিনি।
কালনা খেয়াঘাটের অন্য দিকে রয়েছে নদিয়ার শান্তিপুর। বছর চারেক আগে এই ঘাটে নৌকাডুবির ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল ১৯ জনের। এখন রাস উপলক্ষে সোমবার থেকে ঘাট দিয়ে যাতায়াত বেড়েছে। বিপদ এড়াতে নদীতে টহল দেওয়া শুরু করেছে বিপর্যয় মোকাবিলা দল। রাখা হয়েছে ডুবুরি। এ দিন কালনা পুরসভার ‘দুয়ারে সরকার’ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন সেরে মহকুমাশাসক পৌঁছে যান খেয়াঘাটে। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ঘাট পেরিয়ে বহু মানুষ যাতায়াত করলেও তাঁদের কেউ ‘লাইফ জ্যাকেট’ পরছেন না। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘নদীতে সুরক্ষার জন্য লাইফ জ্যাকেটের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু এখানে লাইফ জ্যাকেট কম রয়েছে। আমি বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরকে এ ব্যাপারে চিঠি দিয়েছি। ফেরিঘাটের ইজারাদারদেরও নিজেরা কিছু লাইফ জ্যাকেট কিনে ব্যবহার করার জন্য বলেছি।’’
সরকারি নিয়ম মেনে ভেসেলের ফিট শংসাপত্র রয়েছে কি না, ভাড়ার তালিকা টাঙানো হয়েছে কি না, লঞ্চে কত জন যাত্রী তোলা হচ্ছে, কী ভাবে, কত পরিমাণ পণ্য জলপথে পরিবহণ করা হচ্ছে, যাত্রীরা মাস্ক ব্যবহার করছেন কি না, এ রকম নানা বিষয় এ দিন ইজারাদারদের কাছে জানতে চান প্রশাসনের আধিকারিকেরা। মহকুমাশাসক কথা বলেন যাত্রীদের সঙ্গে। খেয়াঘাটে নজরদারির জন্য যে সিসি ক্যামেরাগুলি রয়েছে, সেগুলি পরীক্ষা করেন। সম্প্রতি মালদহের একটি দুর্ঘটনার কথা স্মরণ করিয়ে মহকুমাশাসক জানিয়ে দেন, সতর্ক না থাকলেই বিপদ ঘটতে পারে।
এ দিন পরিদর্শন চলাকালীন মহকুমাশাসক খেয়াঘাটে ডেকে পাঠান বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কালনা মহকুমার আধিকারিক, মহকুমার অতিরিক্ত পরিবহণ আধিকারিককে। তাঁদের তিনি বুধবার খেয়াঘাটের ঠিকাদারদের সঙ্গে বৈঠক করার নির্দেশ দেন। তার পরে সরকারি নির্দেশিকা ঠিকঠাক মানা হচ্ছে কি না দেখতে তিনি ফের শুক্রবার খেয়াঘাট পরিদর্শন করবেন বলে জানান।
এ দিন পরিদর্শন শেষে মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘সরকারি নিয়ম বেশিরভাগই মানা হচ্ছে। বিষয়টি দেখা হচ্ছে।’’