মিছিলে বহিষ্কৃত নেতা, চাপানউতোর তৃণমূলে

এক দিনে একই সংগঠনের দু’টি আলাদা মিছিল। একটি সংগঠনের পদাধিকারীদের নেতৃত্বে, অন্যটি বহিষ্কৃত নেতার নেতৃত্বে। রবিবার জামুড়িয়ায় যুব তৃণমূলের এই দুই মিছিল নিয়ে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। বহিষ্কৃত নেতার মিছিলটি নিয়ে বিশদে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

Advertisement

নীলোৎপল রায়চৌধুরী

জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৫ ০১:২৮
Share:

জামুড়িয়ায় যুব তৃণমূলের মিছিলে অলোক দাস। রবিবার। —নিজস্ব চিত্র।

এক দিনে একই সংগঠনের দু’টি আলাদা মিছিল। একটি সংগঠনের পদাধিকারীদের নেতৃত্বে, অন্যটি বহিষ্কৃত নেতার নেতৃত্বে। রবিবার জামুড়িয়ায় যুব তৃণমূলের এই দুই মিছিল নিয়ে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। বহিষ্কৃত নেতার মিছিলটি নিয়ে বিশদে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

Advertisement

এ দিন সকালে সংগঠনের কোর কমিটির পাঁচ সদস্যের নেতৃত্বে জামুড়িয়ায় মছিল করে যুব তৃণমূল। স্থানীয় বেকারদের চাকরি দেওয়া, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাবিত জমি বিলের বিরোধিতায় এই মিছিলের আয়োজন করা হয়। মিছিলে হাঁটেন সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি পূর্ণশশী রায়, মহিলা ব্লক সভাপতি রাখী কর্মকার প্রমুখ।

এর পরেই বিকেলে যুব তৃণমূলের নামে আর একটি মিছিল বেরোয়। নেতৃত্ব দেন সংগঠন থেকে বহিষ্কৃত নেতা অলোক দাস। একশো দিনের বন্ধ হয়ে থাকা কাজ অবিলম্বে চালুর দাবি, জমি বিলের বিরোধিতা ও আসন্ন পুরভোটে দলীয় প্রার্থীদের জেতানোর ডাক দেওয়া হয় এই মিছিল থেকে। হাঁটেন সংগঠনের আসানসোল (শিল্পাঞ্চল) কার্যকরী সভাপতি ববিতা দাস-সহ এই শিল্পাঞ্চলের তৃণমূল এবং যুব তৃণমূলের বেশ কয়েক জন নেতা। সকালের মিছিলের তুলনায় এই মিছিলে বেশি লোক হয়েছিল বলে স্থানীয় সূত্রের খবর।

Advertisement

তৃণমূল সূত্রের খবর, জামুড়িয়ার শ্যাম গোষ্ঠীর কারখানায় দৌরাত্ম্যের অভিযোগে গত বছর দলের শীর্ষ নেতৃত্ব অলোকবাবুকে বহিষ্কার করে। তার পরে তাঁকে দলে ফেরানো হয়নি। কিন্তু তাতে অলোকবাবুর কোনও হেলদোল নেই। অভিযোগ, তিনি আগের মতোই দলের নাম করে নানা কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। জামুড়িয়া বাসস্ট্যান্ডের কাছে সংগঠনের নামে অফিস খুলে নিয়মিত বসেন। দলের নাম করে হুমকি-দাদাগিরির অভিযোগও এর মাঝে উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে।

তৃণমূলের জামুড়িয়া যুব কোর কমিটির সদস্য সত্যজিত অধিকারীর দাবি, দলের ভাবমূর্তি খারাপ করায় অলোককে বহিষ্কার করা হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও অলোকের নেতৃত্বে অপকর্ম বন্ধ হয়নি। তাঁর অভিযোগ, “এ বার অলোকের নেতৃত্বে যে মিছিল হল তাতে বারবনি, রানিগঞ্জ, অন্ডাল, আসানসোল ও হিরাপুর থেকে বাস, গাড়ি ও বাইকে লোক নিয়ে আসা হয়েছিল। ববিতা দাস কী করে ওই মিছিলে হাঁটলেন? এটা আমরা ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে জানাব।” তবে তাঁর দাবি, এ সব যারা করছে তাদের দ্রুত ক্ষয় শুরু হবে।

যুব তৃণমূলের আসানসোল জেলা (শিল্পাঞল) সভাপতি তথা টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্র বলেন, “মিছিলের বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নিচ্ছি। এমন কিছু ঘটে থাকলে উচ্চ নেতৃত্বকে জানাব।” তৃণমূলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) কার্যকরী সভাপতি ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘আসল মিছিলে দলের যুব সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক ছিলেন। সেই মিছিলে না হেঁটে ববিতা দাস কেন বহিষ্কৃত নেতার মিছিলে হাঁটলেন, সে নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। জেলা নেতৃত্ব যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।’’

বহিষ্কৃত হয়েও সংগঠনের মিছিলে কেন? অলোকবাবুর জবাব, “অগণিত কর্মী সঙ্গে রয়েছেন। তাঁদের চাপে মিছিল করায় কোনও বাধা আছে বলে আমার জানা নেই।” ববিতাদেবী বলেন, ‘‘সকালে যে মিছিল হবে, আমাকে জানানো হয়নি। বিকেলে আমার নেতৃত্বে মিছিল হয়েছে। সেখানে কেউ ঢুকে পড়লে আমি কী করতে পারি?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement