বেহাল পুর পরিষেবার অভিযোগে কয়েক বছর ধরে আন্দোলন চালিয়েছে তারা। গত বিধানসভা ভোটে শহরের দু’টি আসনেই জেতার পরে পুরসভা দখলেও নজর দিয়েছিল বাম ও কংগ্রেস। কিন্তু ভোটের ফল ঘোষণার আগে কোনও আশা দেখছে না বামেরা। ভোটের নামে প্রহসন হয়েছে দাবি করে গণনা বয়কটেরও ডাক দিয়েছে তারা।
দুর্গাপুরের ৪৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে গত বার তৃণমূল ২৯টি, বামেরা ১১টি এবং কংগ্রেস, বিজেপি ও নির্দল একটি করে আসনে জেতে। পরে নির্দল কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেন। এ বার একটি আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আগেই জিতে গিয়েছে তৃণমূল। আজ, বৃহস্পতিবার বাকি ৪২টি ওয়ার্ডের ফল ঘোষণা হবে।
বুধবার শহরের সিপিএম নেতা পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, ‘‘যে ভাবে ভোট হয়েছে, তার পরে আমাদের আর কোনও কিছুই আশা করছি না। গোটা প্রক্রিয়া থেকেই আমরা সরে এসেছি। এই প্রহসনের মধ্যে আমরা নেই।’’ শহরের বিজেপি নেতা তথা পুরভোটের প্রার্থী অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়েরও অভিযোগ, ‘‘সাধারণ মানুষ তো ভোটই দিতে পারেননি। তাই কিছু আশা করার নেই।’’ কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ফের ভোট করানোর দাবিও তুলেছেন তিনি।
এ দিন ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের ৪০৪ নম্বর বুথে পুনর্নির্বাচন হয়। ভোটের দিন সেখানে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠেছিল বিজেপি-র বিরুদ্ধে। এ দিন সেখানে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ১৩৫১ জন ভোটারের মধ্যে এ দিন ৯০৪ জন ভোট দিয়েছেন। তবে সিপিএম বা বিজেপি এ দিন সেখানে কোনও পোলিং এজেন্ট বসায়নি।
হাইকোর্ট যে অবাধ নির্বাচনের নির্দেশ দিয়েছিল তা মানা হয়নি দাবি করে এ দিনই আদালত অবমাননার মামলা রুজু করেছে সিপিএম। ভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগে বিজেপি বিকেলে মোটরবাইক মিছিল করে ট্রাঙ্ক রোড এলাকায়। ১৯ অগস্ট ‘সেভ ডেমোক্রেসি ফোরাম’-এর দুর্গাপুর শাখা ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে’র ডাক দিয়ে মিছিল করবে। থাকার কথা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, প্রাক্তন বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়, আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যদের।
প্রশাসন জানায়, দুর্গাপুর গভর্নমেন্ট কলেজের নেতাজি মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ভোট গণনা উপলক্ষে কড়া পুলিশি ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। সিপিএম নেতা পঙ্কজবাবু অবশ্য দাবি করেন, ‘‘দুর্গাপুরের মানুষকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। প্রতিবাদে আমরা গণনা বয়কট করছি।’’ বিজেপি-র অমিতাভবাবুরও অভিযোগ, ‘‘আমাদের প্রার্থী ও এজেন্টদের উপরে হামলা হয়েছে। ভোট দিতেই দেওয়া হয়নি ভোটারদের। এই নির্বাচন অর্থহীন।’’
বিরোধীদের সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের দুর্গাপুর জেলা সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘মানুষ যে ভাবে ভোট দিয়েছেন তাতে পরিষ্কার, তাঁরা উন্নয়নের পক্ষে রয়েছেন। তাই আমাদের ফল ভালই হবে।’’