ব্যাগ হাতে শিক্ষক অমিতাভ সামন্ত। নিজস্ব চিত্র।
রিলে করে ব্যাগ বদলের ঘটনায় শেষমেশ হাপিস হয়ে গিয়েছিল দু’টি ব্যাগ। তারই একটির খোঁজ মিলল দুর্গাপুরে। বুধবার রাতে শহরের সিটি সেন্টারে একটি সেলুনের পিছন থেকে উদ্ধার হয় দুর্গাপুর গভর্নমেন্ট কলেজের শিক্ষক অমিতাভ সামন্তের ব্যাগ। তিনি জানান, ব্যাগের কোনও জিনিস খোয়া যায়নি। একটি ব্যাগ উদ্ধার হলেও গোটা ঘটনা নিয়ে রহস্য কাটেনি। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কোনও সূত্র পায়নি পুলিশও।
সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দুর্গাপুর শহরে পরপর পাঁচ জনের ব্যাগ উধাও হয়ে যায়। প্রথম ঘটনাটি ঘটে সেলস ট্যাক্স অফিসে। সেখানকার অফিসার প্রমোদ কুমারের ব্যাগটি খোয়া যায়। কিন্তু দুর্গাপুর আদালতের আইনজীবী কালাচাঁদ গড়াই তাঁকে ফোন করে জানান, প্রমোদবাবুর ব্যাগটি বার অ্যাসোসিয়েশনে তাঁর ব্যাগের জায়গায় রাখা আছে। কিন্তু তাঁর ব্যাগটি উধাও হয়ে গিয়েছে। প্রমোদবাবু নিজের ব্যাগ ফেরত নেন। এর পরে আবার কলেজের শিক্ষক অমিতাভবাবু আবার কালাচাঁদবাবুকে ফোন করে জানান, আইনজীবীর ব্যাগটি মিলেছে তাঁদের কলেজে। কিন্তু অমিতাভবাবুর ব্যাগটি উধাও হয়েছে।
এরই মধ্যে পুরসভার কাউন্সিলর সুশীল চট্টোপাধ্যায়ের ব্যাগ হারিয়ে যায়। পরে তিনি ফোন পান এনআইটি-র শিক্ষক সুজিতশঙ্কর পাঁজার কাছ থেকে। সুজিতবাবু জানান, এনআইটি-তে তাঁর ব্যাগের জায়গায় সুশীলবাবুর ব্যাগ রাখা আছে। তাঁর ব্যাগটির এখনও কোনও খোঁজ মেলেনি। সুশীলবাবু ও অমিতাভবাবু সোমবার রাতেই পুলিশে অভিযোগ করেছিলেন।
ঘটনার পর থেকে শহরের নানা জায়গায় সাদা পোশাকের পুলিশ নজরদারি শুরু করে। কোনও পরিত্যক্ত ব্যাগ পেলে পুলিশকে খবর দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাতে সিটি সেন্টার ফাঁড়িতে ফোন করে এক ব্যক্তি জানান, বাসস্ট্যান্ডে একটি সেলুনের পিছনে একটি ব্যাগটি পড়ে রয়েছে। পুলিশ সেটি উদ্ধার করে ফাঁড়িতে আনে। ব্যাগ খুলে দেখা যায়, ভিতরে অমিতাভবাবুর কাগজপত্র রয়েছে। রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ অমিতাভবাবুকে ফোনে খবর দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি ফাঁড়িতে এসে ব্যাগটি ফেরত নেন। ব্যাগ পরীক্ষা করে তিনি জানান, ব্যাগের জিনিসপত্র খোয়া যায়নি। এমনকী, টিফিন বাক্সের খাবারেও হাত পড়েনি।
সেলস ট্যাক্স অফিস, বার অ্যাসোসিয়েশন, এনআইটি বা দুর্গাপুর গভর্নমেন্ট কলেজে সিসিটিভি না থাকায় কোনও ফুটেজ পুলিশ পায়নি। তবে তদন্তে নেমে পুরসভা থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ। কিন্তু সেই ফুটেজ খতিয়ে দেখে সন্দেহজনক কিছু মেলেনি বলে জানায় পুলিশ।
ফলে, কে বা কারা এ ভাবে ব্যাগ বদল করল, কী উদ্দেশে তা করা হল, কেনই বা গভর্নমেন্ট কলেজ থেকে কিলোমিটার পাঁচেক দূরে সেলুনের পিছনে অমিতাভবাবুর ব্যাগটি ফেলে রেখে যাওয়া হল, সে সবের উত্তর এখনও অজানা। ব্যাগ রহস্য তাই ভেদ হল না তিন দিন পরেও।