শোকার্ত পড়শিরা। নিজস্ব চিত্র
চিকিৎসার জন্য ছেলেকে নিয়ে গিয়েছিলেন ভিন্ রাজ্যে। সেখানে মৃত্যু হয় ছেলের। দেহ নিয়ে বাড়ি ফেরার সময়ে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল বৃদ্ধা মায়েরও। বুধবার অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে পূর্ব বর্ধমানের গুসকরার বাসিন্দা মা-ছেলের এমন মৃত্যুর খবর এসে পৌঁছনোর পরে শোকের ছায়া এলাকায়। পুলিশ জানায়, দু’জনের দেহ নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গুসকরার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের শিবতলা এলাকার বাসিন্দা মনোজ ঠাকুর (৪৩) দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ও লিভারের রোগে ভুগছিলেন। দিন দশেক আগে তাঁকে চিকিৎসার জন্য অন্ধ্রপ্রদেশের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সঙ্গে গিয়েছিলেন মা লীলা ঠাকুর (৭০), মাসি ঊর্মিলা ঠাকুর ও ভাই মিঠুন ঠাকুর। মনোজবাবুর আর এক ভাই বিনোদ ঠাকুর জানান, মঙ্গলবার হাসপাতালে মৃত্যু হয় মনোজের। দেহ নিয়ে বুধবার অ্যাম্বুল্যান্সে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন মা, মাসি ও ভাই।
বিনোদবাবু বলেন, ‘‘আমরা খবর পেয়েছি, নেল্লোরে জাতীয় সড়কে উল্টো দিক থেকে আসা একটি গাড়ি অ্যাম্বুল্যান্সে ধাক্কা দেয়। ঘটনাস্থলেই মায়ের মৃত্যু হয়।’’ পুলিশ সূত্রে জানা যায়, অ্যাম্বুল্যান্সের অন্য দুই আরোহী আহত হয়েছেন। তাঁদের স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
তৃণমূলের গুসকরা শহর সভাপতি কুশল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভিন্ রাজ্যে পরপর বিপদে পড়েছে ওই পরিবারটি। বাড়ির লোকজন দিশেহারা হয়ে পড়েন। আউশগ্রাম থানার পুলিশ অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। দু’জনের দেহ ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানকার হাসপাতালে ময়না-তদন্তের পরে দেহ গুসকরায় পাঠানো হবে।
মনোজবাবু ঝালাইয়ের কাজ করতেন। প্রতিবেশী সাগর মুখোপাধ্যায়, উমেশ সাহানি, প্রমোদ পাসোয়ানেরা বলেন, ‘‘বেশ কিছু দিন ধরেই মনোজ ভুগছিলেন। চিকিৎসার জন্য গিয়ে তিনি এবং লীলাদেবী, দু’জনেরই প্রাণ হারানোর ঘটনা মানতে পারছি না!’’ পড়শিরা জানান, দু’জনের দেহ গুসকরায় ফেরানোর জন্য প্রয়োজনীয় টাকা জোগাড় করছেন তাঁরা।