দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট। নিজস্ব চিত্র।
স্টিল অথরিটি অব ইন্ডিয়া লিমিটেডের (সেল) দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের অর্থ বিভাগের দুই আধিকারিকের বিরুদ্ধে পেনশন খাতে বড়সড় তছরুপের অভিযোগ উঠেছে। সংস্থা সূত্রের খবর, তাঁদের সাসপেন্ডও করা হয়েছে। ডিএসপি কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও, সরব হয়েছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে থানায় দুই আধিকারিকের নামে লিখিত অভিযোগ করেন ডিএসপি কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্তদের এক জন ডিএসপির অর্থ বিভাগের এক ডিজিএম এবং এক জন ডেপুটি ম্যানেজার পদমর্যাদার আধিকারিক। মোট প্রায় ৩ কোটি
৩৩ লক্ষ টাকা তছরুপের অভিযোগ আনা হয়েছে। ডিএসপি কর্তৃপক্ষ তাঁদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, সরকারি নিয়মের অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ, নথি জাল, ভুয়ো হিসাব লেখা, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র-সহ নানা অভিযোগ এনেছেন। পুলিশ জানায়, তদন্ত শুরু হয়েছে।
সংস্থার একটি সূত্রের খবর, পেনশন খাতে অতিরিক্ত ব্যয় দেখানো হয়েছে। অভিযোগ, অবসর নেওয়া কর্মীদের পেনশন বাবদ ২০২০-২১ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত অতিরিক্ত ৩ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে বলে নথিতে দেখানো হয়েছে। সেলের হিসাবরক্ষক সংস্থা গরমিল ধরার পরে শুরু হয় তদন্ত। এর পরেই সাসপেন্ড করা হয় ডিএসপির অর্থ বিভাগের ওই দুই আধিকারিককে।
এ বিষয়ে সরব হয়েছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন। সিটু অনুমোদিত হিন্দুস্থান স্টিল এমপ্লয়িজ় ইউনিয়নের সভাপতি বিশ্বরূপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ডিএসপি ধারাবাহিক লাভ করার পরেও নানা খাতে শ্রমিক-কর্মীদের কয়েক বছরের বকেয়া মেটাচ্ছেন না কর্তৃপক্ষ। অথচ, প্রায় তিন কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগে দুই আধিকারিককে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে আমরা জেনেছি। অভিযোগের উপযুক্ত তদন্ত হোক। আরও কেউ যুক্ত কিনা তা প্রকাশ্যে আসুক।”
আইএনটিইউসি অনুমোদিত হিন্দুস্থান স্টিল ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রজত দীক্ষিত বলেন, “পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে প্রকৃত তথ্য প্রকাশ্যে আনা হোক। যেখানে কর্মরত অবস্থায় মৃত শ্রমিক-কর্মীদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া আটকে রাখা হয়েছে, সেখানে এমন তছরুপের অভিযোগ মানা যায় না।’’ এইচএমএস নেতা সুকান্ত রক্ষিতের দাবি, “এই বিপুল অনিয়মের সঙ্গে মাত্র দু’জন জড়িত, এমনটা মনে হচ্ছে না। আরও কেউ কেউ রয়েছেন। অভিযোগের প্রকৃত তদন্ত করে যে বা যাঁরা এর সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের সবার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করতে হবে।”
ডিএসপি সূত্রের খবর, অর্থ বিভাগের আধিকারিক পিনাকীরঞ্জন মুখোপাধ্যায় এবং ধ্রুবজ্যোতি রায়ের নাম উঠে এসেছে এই অভিযোগে। তাঁদের সঙ্গে বুধবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। সংস্থার মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক বেদবন্ধু রায়ের সঙ্গেও এ দিন একাধিক বার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।