সকাল ১১টা। অফিসের হাল দেখে ফিরে যাচ্ছিলেন এক প্রৌঢ়। তাঁর ক্ষোভ, ‘কী করব বলুন তো, রোজই এক ছবি। এখনও কেউ আসেননি।’
সকাল সওয়া ১১টা। অফিসের বাইরে দাঁড়িয়ে মহীশিলার বাসিন্দা লক্ষ্মণ চন্দ্র। তিনি জানালেন, প্রায় ৪৫ মিনিট হয়ে গেল, অফিসে এসেছেন। কিন্তু কারও দেখা মেলেনি।— দু’টো দৃশ্যই কন্যাপুরের বিএলএলআরও অফিসের। নানা এলাকার বাসিন্দাদের ক্ষোভ, দীর্ঘ দিন ধরেই এই অফিসে দেরিতে আসাটাই যেন নিয়ম।
সকাল সাড়ে ১০টা। ওই অফিস চত্বরে গিয়ে দেখা গেল, বার্নপুর, মহীশিলা, ধাদকা, এসবি গড়াই রোডের নানা এলাকা থেকে অন্তত ২০জন বাসিন্দা এসেছেন নানা কাজে। অথচ, পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসকের অফিসের থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে থাকা এই অফিসের একতলা গোটাটাই ফাঁকা। দোতলায় রয়েছেন এক জন মাত্র রেভিনিউ অফিসার।
সকাল ১১টা। শুরু হল সাফাইয়ের কাজ। সাফাইকর্মী জানালেন, সাড়ে ১১টা বা তার পরে দেখা মিলবে কর্মীদের। এই পরিস্থিতিতে বার্নপুরের বাসিন্দা এসকে গুপ্তের ক্ষোভ, ‘‘এসেছিলাম জমির খাজনা দিতে। কিন্তু কারও দেখা নেই। বাড়ি ফিরতে দেরি হয়ে যাবে।’’
সাড়ে ১১টা নাগাদ। খাজনা জমা দেওয়ার কাউন্টারে দেখা মিলল ভূমি সহায়ক সঞ্জয় চক্রবর্তীর। এমন অসময়ে কেন? তাঁর দাবি, ‘‘এই অফিসে নতুন এসেছি।’’
ঘড়ির কাঁটায় পৌনে ১২টা। তখনও দেখা নেই কর্মীদের। সকাল ১০টা নাগাদ অফিসে আসা বিএলএলআরও আধিকারিক সমরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবশ্য দাবি, ‘‘সময়ে হাজিরা খাতায় অনেকেই সই করেন না। দু’জন অসুস্থ হয়ে ছুটিতে রয়েছেন। অনেকে অফিসের কাজেই বাইরে থাকেন। বাইরের কাজ সেরে অফিসে আসেন বলেই চেয়ার ফাঁকা দেখায়।’’ পাশ থেকে রেভিনিউ অফিসার স্নেহা চট্টোপাধ্যায় অবশ্য দাবি করলেন, ‘‘সকালে ঠিক সময়েই এসেছি। সইটা করা হয়নি। গতকাল যাওয়ার সময়ে সই করিনি। তাই এখন সেটাও করলাম।’’