মাথরুনে ব্যাঙ্কের লাইন।নিজস্ব চিত্র।
লম্বা লাইন রোজই পড়ছে। তবে মাসের প্রথম দিন বলে ভিড়টা আরও একটু বেশিই ছিল। তারমধ্যেই টাকা শেষ হয়ে যাওয়ায় ঝাঁপ বন্ধ করে তালা ঝুলিয়ে দেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। এরপরেই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ও গ্রাহকদের বচসা শুরু হয়। শেষমেশ তালা ঝুলিয়ে দিলেন মঙ্গলকোটের মাথরুনের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত শাখার কর্মীরা। মাসের প্রথম দিন টাকা না পেয়ে ফিরলেন আরও অনেক গ্রাহক।
দীর্ঘক্ষণ ধরে এই ব্যাঙ্কের সামনে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন কোঁয়ারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের কর্মী বাপি দাস, বোনের বিয়ের জন্য টাকা তুলতে আসা কুলসোনার বাসিন্দা আব্দুর নুর মল্লিকেরা। কিন্তু টাকা না পেয়ে তাঁদের সকলেরই এক রা, ‘‘নগদ মিলছে না। অথচ এই শাখাটির উপরে অন্তত পাঁচটি গ্রামের বাসিন্দারা নির্ভরশীল।’’ স্থানীয় সূত্রে খবর, সকাল থেকেই সমস্যার সূত্রপাত। বেলা ১১টা নাগাদ ব্যাঙ্কের সামনে প্রায় শ’তিনেক গ্রাহক লাইন দিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়েও টাকা না মেলায় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শুরু হয় বচসা। এরপরেই ঝাঁপ বন্ধ করে দেন ব্যাঙ্ক-কর্তারা। আধ ঘণ্টা পরে পুলিশ এসে দরজা খুললেও সমস্যা মেটেনি বলে জানা গিয়েছে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রয়োজনীয় টাকার জোগান না থাকাতেই সমস্যা হয়েছে। বেলা ১১টা পর্যন্ত লাখ তিনেক টাকা ছিল। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই তা শেষ হয়ে যাওয়ায় শুরু হয় গোলমাল। ঝাঁপ বন্ধ না হলে গ্রাহকেরা চড়াও হতে পারতেন বলে আশঙ্কা করেছেন ব্যাঙ্কের আধিকারিকেরা। এ দিন ওই শাখায় ছিলেন ভাল্যগ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান শর্মিলা চৌধুরী। তাঁর দাবি, ‘‘গ্রামীণ এলাকা বলে সরকার এই সব শখার উপর নজর দিচ্ছেন না। ফি দিন কাজ ফেলে লাইন দেওয়া আর সম্ভব হচ্ছে না।’’ তবে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের আশা, আজ, শুক্রবার টাকা দেওয়া সম্ভব হবে।
মাস পয়লায় মিড ডে মিলের জন্য টাকা তুলতে এসেছিলেন মঙ্গলকোটের কোঁয়ারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অশিক্ষক কর্মী দেবনারায়ণ ভট্টাচার্য। ঘণ্টা দুয়েক ব্যাঙ্কে বসে থেকেও লাভ হয়নি। এর জেরে স্কুলের মিড-ডে মিল বন্ধ হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন তিনি।
উল্টো দিকে আউশগ্রামেও তিন সপ্তাহ ধরে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএম বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়ছেন গ্রাহকেরা। বাসিন্দারা জানান, আউশগ্রামে একটিই ব্যাঙ্ক ও ওই ব্যাঙ্ক লাগোয়া একটিই এটিএম রয়েছে। নোট বাতিলের ঘোষণার পর থেকেই ওই এটিএম বন্ধ রয়েছে বলে অভিযোগ। বাসিন্দারা জানান, লাগোয়া ২৩টি গ্রামের প্রায় ২২ হাজার মানুষ এই ব্যাঙ্ক ও এটিএম-র উপরে নির্ভরশীল। দায়েমনগরের বাসিন্দা সরিফ শেখ অভিযোগ করেন, ‘‘কারেন্ট অ্যাকাউন্ট থাকা সত্ত্বেও প্রয়োজনমতো টাকা পাচ্ছি না। এটিএমও বন্ধ।’’ ব্যাঙ্কের ম্যানেজার মধুসূদন দাস অবশ্য বলেন, ‘‘জোগান আর চাহিদার সাজুয্য নেই। তাই এমন হচ্ছে।’’