গ্রামে প্রতিনিধিরা। নিজস্ব চিত্র।
ভোটের ফল বেরনোর পরে ওঠা হিংসার অভিযোগের বিষয়ে খোঁজ নিতে রাজ্যের নানা প্রান্তে যাচ্ছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা। সোমবার সেই প্রতিনিধি দল পৌঁছয় পূর্ব বর্ধমানে। দলটি এ দিন প্রথমে বর্ধমানের সার্কিট হাউসে পৌঁছে এক দফা বৈঠক করে। তার পরে সদস্যেরা বিকেলে জামালপুরের নবগ্রামে যান। সেখান থেকে সন্ধ্যায় তাঁরা রায়নার উদ্দেশে রওনা দেন।
ভোটের ফল বেরনোর পর দিন, ৩ মে নবগ্রামে খুন হন শাজাহান শা (৩০), বিভাস বাগ (২৭) ও কাকলি ক্ষেত্রপাল (৪৭)। শাজাহান ও বিভাস এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত। কাকলিদেবী স্থানীয় বিজেপি নেতার মা। ভোটের ফলের পরে রায়নার সমসপুরে খুন হন তৃণমূল সমর্থক গণেশ মালিক (৬০)। নবগ্রামের গোলমালের ঘটনায় পুলিশ মোট ১২ জনকে গ্রেফতার করেছিল। রায়নার খুনের ঘটনায় ৮ জন গ্রেফতার হয়।
এ দিন পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে কমিশনের প্রতিনিধিরা জামালপুরের নিহত তিন জনের বাড়িতে যান। তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সে দিন কী ঘটনা ঘটেছিল, তার বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে প্রতিনিধি দলটি। নিহত বিভাসের স্ত্রী ঝর্না বাগ জানান, সে দিন কী ঘটেছিল, তা কমিশনের প্রতিনিধিরা তাঁর কাছে জানতে চেয়েছেন। বিভাস কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তা-ও জানতে চান। ঝর্নাদেবীর দাবি, কমিশনের প্রতিনিধিদের তিনি ৪ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। চাকরির আর্জি জানালেও প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা সে ব্যাপারে কোনও আশ্বাস দেননি, দাবি তাঁর। কাকলিদেবী এবং শাজাহন শাহের বাড়িতে গিয়েও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে প্রতিনিধি দলটি। তার পরে তাঁরা রায়নায় রওনা দেন। তবে ওই কমিশনের প্রতিনিধিরা এ দিন সংবাদমাধ্যমের কাছে কোনও কথা বলতে চাননি।
তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য মুখপাত্র দেবু টুডুর দাবি, ‘‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বিজেপির এজেন্সি হয়ে, ওদের নেতাদের কথামতো কাজ করছে।’’ বর্ধমানের বিজেপি নেতা সন্দীপ নন্দীর পাল্টা দাবি, ‘‘এ রাজ্যে সন্ত্রাসের পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে এসেছেন কমিশন। তাতেই তৃণমূলের জ্বালা ধরছে।’’