বর্ধমান মেডিক্যালের পরে কাটোয়া হাসপাতাল। কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে ফের শিশু বদলের অভিযোগ উঠল বর্ধমানে।
সদ্যোজাতের চিহ্নিতকরণের জন্য ব্যবহৃত ‘ডিস্ক’ বদলে গিয়েই এমনটা হয়েছে বলে দাবি প্রসূতির পরিবারের। তবে এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে পাল্টা দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। যদিও সন্তানকে ফিরে পেতে ডিএনএ-পরীক্ষার দাবি তুলেছেন সদ্য প্রসূতি।
কাটোয়ার পেঁকুয়া গ্রামের আফরোজা বিবির গত রবিবার ছেলে হয় কাটোয়া হাসপাতালে। বছর তিরিশের আফরোজার দাবি, তাঁর ছেলে লম্বা গড়নের হয়েছিল। তার মাথায় তেমন চুল ছিল না। প্রসবের ঘণ্টাখানেক পরে আফরোজাকে প্রসূতি বিভাগে পাঠানো হয়। বধূটির অভিযোগ, ‘‘তখনই বাচ্চা বদলে গিয়েছে। পরে যে বাচ্চাটাকে দেওয়া হয়, সে বেঁটে। মাথা ভর্তি চুল।’’
সোমবার হাসপাতাল সুপারের কাছে শিশু বদলের অভিযোগ জানান আফরোজার স্বামী এজাবুল শেখ। তিনি বলেন, ‘‘আমার ছেলের হাতে নীল রঙের ডিস্ক ছিল। পরে যে বাচ্চাটাকে দেওয়া হয়, তার হাতে লাগানো ডিস্কের রং সাদা। তাতে আমাদের সন্দেহ আরও বাড়ে।’’
পরিবারের দাবি, আফরোজার প্রসবের আধ ঘণ্টা পরে একই চিকিৎসকের অধীনে অস্ত্রোপচার করে ছেলে হয় বীরভূমের কীর্ণাহারের বাসিন্দা এক মহিলার। ওই মহিলার সন্তানের সঙ্গেই আফরোজার ছেলে বদল হয়েছে। তবে কীর্ণাহারের পরিবারটি দাবি করেছে, সন্তান অদল-বদল হয়নি। আফরোজার পরিবার জোর করে তাঁদের শিশুকে কাড়ার চেষ্টা করছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেছে তারা।
সরকারি হাসপাতালে শিশু বদলের অভিযোগ নতুন নয়। সম্প্রতি বর্ধমান মেডিক্যালে শিশুপুত্রের বদলের অভিযোগ করেছিল মাধবডিহির এক পরিবার। হাসপাতাল অভিযোগ না মানলেও, আদালত থেকে ডিএনএ-পরীক্ষার অনুমতি পেয়েছে পরিবারটি।
কাটোয়া হাসপাতালের সুপার রতন শাসমল শিশু বদলের অভিযোগ মানতে চাননি।
তাঁর দাবি, ‘‘ডিস্কের রং বদলের সম্ভাবনা নেই। চিহ্নিতকরণের ডিস্কের একটা নম্বর থাকে যা দিয়ে কে, কোন প্রসূতির সন্তান তা নির্দিষ্ট করা হয়। এ ক্ষেত্রে ডিস্কের নম্বর (৭৩) পাল্টায়নি।’’ শিশু বদলের অভিযোগের ভিত্তিতে গঠিত হাসপাতালের তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিও সুপারের সঙ্গে এক মত।
তবে তাদের তদন্ত-রিপোর্টে সন্তুষ্ট না হয়ে মঙ্গলবার হাসপাতাল সুপারের কাছে ডিএনএ-পরীক্ষার দাবি জানিয়েছে আফরোজার পরিবার।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় বলেন, ‘‘ডিএনএ-পরীক্ষার বিষয়ে পুলিশ সিদ্ধান্ত নেবে। তা ওই পরিবারকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’