কার্গো টার্মিনাল উদ্বোধন। সোমবার। ছবি: বিকাশ মশান jayantamosan@gmail.com
রাজ্যের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী শশী পাঁজা সোমবার দুর্গাপুরের অন্ডালের কাজী নজরুল ইসলাম বিমানবন্দরে কার্গো টার্মিনালের উদ্বোধন করলেন। বণিক সংগঠনগুলি জানিয়েছে, এর ফলে লাগোয়া এলাকার ব্যবসায়ীদের দেশ-বিদেশে পণ্য আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে সুবিধা হবে।
এ দিন শশী বলেন, “দেশের প্রথম বেসরকারি গ্রিনফিল্ড বিমানবন্দর এটি। এখানে কার্গো পরিষেবা চালু হওয়ায় কলকাতা বিমানবন্দরের উপরে চাপ কমবে।” বিমানবন্দরের পরিচালন সংস্থা বিএপিএলের প্রেসিডেন্ট তথা সিএফও অঞ্জু মাদেকা বলেন, “এখান থেকে আনাজ, ফল, মাছ, রসগোল্লা, ই-কমার্স, ওষুধপত্র, শিল্পের যন্ত্রাংশ প্রভৃতি আনা-নেওয়া হয়। সমীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, এই বিমানবন্দর থেকে আগামী আট-দশ বছরে প্রায় ২৫ হাজার টন পণ্য পরিবহণ করা সম্ভব হবে।”
২০২২-এর মে মাসে এই বিমানবন্দরে কার্গো পরিষেবা (পণ্য আনা-নেওয়া) শুরু হয়। কিন্তু পৃথক কার্গো টার্মিনাল না থাকায় যাত্রী টার্মিনালটিই ব্যবহার করা হত। ফলে, সন্ধ্যা ৭টার পরে এই বিমানবন্দর হয়ে পণ্য পাঠানো বা পণ্য ‘ডেলিভারি’ করা যায় না। এখন আলাদা কার্গো টার্মিনাল তৈরি হওয়ায় ২৪ ঘণ্টা এই বিমানবন্দর দিয়ে পণ্য আনা-নেওয়া করা যাবে।
বিমানবন্দর সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, বর্তমানে যাত্রিবাহী বিমানের মাধ্যমেই পণ্য পরিবহণ হয়। পৃথক কার্গো টার্মিনাল গড়ে ওঠায় এ বার কার্গো বিমান চালুর চেষ্টা করা হবে। জানা গিয়েছে, এখন মূলত এই বিমানবন্দর দিয়ে আনাজ, ফল, ফুল, রসগোল্লা, মাছ প্রভৃতি পণ্য পরিবহণ করা হয়। দিন-দিন চাহিদা বাড়ছে। ফলে, কার্গো বিমান চালুর সম্ভাবনা বাড়ছে। কারণ, যাত্রী বিমানের মাধ্যমে সীমিত পরিষেবা দেওয়া সম্ভব। কার্গো টার্মিনাল উদ্বোধনের প্রথম দিন, সোমবারেও বেঙ্গালুরুগামী যাত্রী বিমানে প্রায় এক হাজার টন
আনাজ গিয়েছে।
দুর্গাপুর, রানিগঞ্জ, আসানসোল তো বটেই, লাগোয়া জেলা বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, প্রতিবেশী রাজ্যের ধানবাদ, জামতাড়া প্রভৃতি এলাকার ব্যবসায়ীরা পণ্য পরিবহণের জন্য এই বিমানবন্দর ব্যবহার করছেন। তা ছাড়া এই বিমানবন্দর জাতীয় সড়ক লাগোয়া হওয়ায় বিমানবন্দরে পণ্য আনা-নেওয়ার ব্যাপক সুবিধা রয়েছে।
এই টার্মিনাল চালুর বিষয়টিকে স্বাগত জানাচ্ছে বিভিন্ন বণিক সংগঠন। দুর্গাপুর চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির চেয়ারম্যান তথা আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন সংস্থার (এডিডিএ) ভাইস চেয়ারম্যান কবি দত্ত বলেন, “বাঁকুড়ায় আনাজ, ফুল চাষ হচ্ছে। বীরভূমে মাছ চাষ হচ্ছে। এই বিমানবন্দর দিয়ে সহজেই অন্য শহরে তা পাঠানো যাচ্ছে। কারণ, সড়ক পথে পণ্য পরিবহণের জন্য বিপুল সময় লাগে। বিশেষত দ্রুত পচনশীল সামগ্রী নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিমানে তা হয় না।” ‘দুর্গাপুর স্মল ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনে’র সাধারণ সম্পাদক রতন আগরওয়াল বলেন, “অনেক ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগী অন্য রাজ্যে বরাত পান এবং পণ্য পাঠিয়ে থাকেন। নিয়মিত কার্গো পরিষেবা চালু হলে তাঁদের খুব সুবিধা হবে।”