দুর্গাপুর নগর বন। ছবি: বিকাশ মশান ।
সিটি সেন্টারে ক্ষুদিরাম সরণির পাশে গড়ে উঠেছে ‘নগর বন’। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি দুর্গাপুরে এসে নগর বনের নামকরণ ‘শ্রাবণ্য’ করে যান। সেই মতো প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত বন দফতরের জায়গার বাইরে অতিরিক্ত বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে শহুরে এলাকায় দূষণ রোধ এবং জীববৈচিত্র বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘নগর বন’ গড়া হয়। দুর্গাপুরে দুর্গাপুর সার্কিট হাউসের সামনে বন দফতর ও আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এডিডিএ)-এর যৌথ উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছে এই নগর বন। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে দুর্গাপুর পুরসভা ও মহকুমা প্রশাসন।
পুরসভা সূত্রে জানা যায়, ক্ষুদিরাম সরণির পাশে সার্কিট হাউসের সামনের জায়গাটি এক সময় শুয়োরের অবাধ বিচরণক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত ছিল। বাম আমলে সেখানে ভেষজ উদ্ভিদ চাষ করে ‘হার্বাল পার্ক’ গড়ার পরিকল্পনা হয়। কিন্তু তা শেষ পর্যন্ত হয়নি। অভিযোগ, বছরের পর বছর ধরে সেই জায়গায় ছোট ছোট ঝুপড়ি গড়ে বেআইনি ভাবে শুয়োর প্রতিপালন চলতে থাকে। সিটি সেন্টারে ঢোকার মুখে রাস্তার ধারে নোংরা, আবর্জনাময় পরিবেশ নিয়ে মাঝে মাঝেই সরব হতেন কেউ কেউ। মাঝে এক বার এডিডিএ জায়গাটি বেড়া দিয়ে ঘিরে দিয়েছিল। কিন্তু সেই বেড়া ভেঙে দিয়ে শুয়োর প্রতিপালন চলতে থাকে বলে অভিযোগ ওঠে। তবে সার্কিট হাউস গড়ে ওঠার পরে জায়গার ভোল বদলের জন্য এডিডিএ ইকো পার্ক তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করে। পরে সেখানেই নগর বন প্রকল্প বাস্তবায়িত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহু গাছ লাগানোর পাশাপাশি সৌন্দর্য্যায়নের জন্য বন দফতরের উদ্যোগে বিশালাকার ইস্পাত ও ফাইবারের তৈরি হাতি, পাখি-সহ অন্য জীবজন্তু, বসার জায়গা, জলাশয় প্রভৃতি গড়ে তোলা হয়েছে। এখনও কাজ চলছে। সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে বাঁকুড়ায় বন্যা পরিদর্শনের পরে দুর্গাপুরের সার্কিট হাউসে উঠেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, সার্কিট হাউস থেকে নগর বনের সৌন্দর্য্য দেখে তিনি মুগ্ধ হন। বীরভূম রওনা হওয়ার আগে আধিকারিকদের ডেকে নগর বনের নাম শ্রাবণ্য করার নির্দেশ দেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শীঘ্রই মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নগর বনের প্রবেশ পথে শ্রাবণ্য নামের ফলক বসানো হবে। সম্প্রতি পুরসভার তরফে প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকা খরচ করে ভিতরে ৯২টি আলোকস্তম্ভ তৈরি করা হয়েছে।
পুরপ্রশাসক অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় বলেন, “শহরে সবুজ এলাকার পরিধি বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে নগর বন গড়ে তোলা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নগর বন দেখে খুশি হয়েছেন। নগর বনের নাম তিনি শ্রাবণ্য রেখেছেন। তা কার্যকর করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে প্রশাসন।”