বরাদ্দ কোটি টাকা, থমকে মর্গ সংস্কার

মর্গ সংস্কারের জন্য বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজকে স্বাস্থ্য দফতর এক কোটিরও বেশি টাকা বরাদ্দ করেছে মাস ছয়েক হয়ে গেল। প্রায় দু’মাস আগে দরপত্র ডেকে কাজের বরাতও দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:১৯
Share:

মর্গ সংস্কারের জন্য বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজকে স্বাস্থ্য দফতর এক কোটিরও বেশি টাকা বরাদ্দ করেছে মাস ছয়েক হয়ে গেল। প্রায় দু’মাস আগে দরপত্র ডেকে কাজের বরাতও দেওয়া হয়েছে। গত বুধবার থেকে কাজ শুরু হবে, পুলিশ ও প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ। কিন্তু মৃতদেহ বর্ধমান থেকে কাটোয়ার মর্গে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে পুলিশের তরফে কোনও নিশ্চিয়তা না মেলায় মর্গের সংস্কার থমকে রয়েছে, দাবি জেলা প্রশাসন ও কলেজ কর্তৃপক্ষের।

Advertisement

শনিবার অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) নিখিল নির্মল বলেন, “মৃতদেহ কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে পুলিশ কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি বলে সংস্কারের কাজ আটকে রয়েছে।” মেডিক্যাল কলেজের উপ-অধ্যক্ষ তথা হাসপাতালের সুপার উৎপল দাঁয়ের ক্ষোভ, “পুলিশ সুপারের নির্দেশের পরেও বর্ধমান থানা সহযোগিতা করছে না। আবার মৃতদেহ থাকলে পূর্ত দফতর কাজ করতে চাইছে না। এই টানাপড়েনে টাকা ফেরত না চলে যায়!” পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবালের অবশ্য প্রশ্ন, “মর্গ সংস্কারের বিষয়ে পুলিশের ভূমিকা কোথায়? আমাদের টানা হচ্ছে কেন? বর্ধমান থেকে মৃতদেহ কাটোয়া নিয়ে যাওয়ার সময়ে তো আমরা সাহায্য করে দেব।”

মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা যায়, বছর দেড়েক আগে মর্গের ‘কুলিং সিস্টেম’ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখান। স্মারকলিপিও দেন মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ও সুপারের কাছে। তার পরেই রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, মর্গের আধুনিকীকরণ হবে। মর্গটি স্বরাষ্ট্র দফতরের হাতে থাকায় জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন সেখানে চিঠি পাঠান। স্বরাষ্ট্র দফতর ওই টাকা দিতে পারবে না জানানোয় স্বাস্থ্য দফতরকে বিষয়টি জানান মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। প্রকল্পের রিপোর্ট পাওয়ার পরে স্বাস্থ্য দফতর মর্গ সংস্কারে এক কোটি ২০ লক্ষ টাকা অনুমোদন করে। এই টাকা পাওয়ার পরে পূর্ত দফতর দরপত্র ডাকে। এমনকী, কাজের বরাতও দিয়ে দেওয়া হয়। এর পরেই গোল বাধে।

Advertisement

পূর্ত দফতরের (ভবন ও বিদ্যুৎ) ইঞ্জিনিয়ররা কলেজ কর্তৃপক্ষকে সাফ জানান, মর্গ সংস্কারের সময়ে ময়না-তদন্ত করলে বা কোনও মৃতদেহ থাকলে কাজ করা সম্ভব নয়। কোনও ঠিকাদার সংস্থার কর্মী কাজ করতে চাইবেন না। সে জন্য মর্গটি সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা দরকার। ময়না-তদন্তের কাজ বন্ধ রাখা সম্ভব নয়, তাই মৃতদেহ কাটোয়া নিয়ে যাওয়া হবে জানিয়ে ৩ জানুয়ারি সিএমওএইচ একটি চিঠি দেন প্রশাসনকে। সেখানে জানানো হয়, কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালকে সব রকম সাহায্য করবে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। কিন্তু মৃতদেহ নিয়ে যাবে পুলিশ।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়, এক মাস কেটে যাওয়ার পরেও বর্ধমান থানা কোনও উত্তর না দেওয়ায় জেলাশাসকের অফিসে একটি বৈঠক হয়। সেখানেই জেলাশাসক মর্গ সংস্কারের বিষয়টি দেখার জন্য অতিরিক্ত জেলাশাসক নিখিল নির্মলকে দায়িত্ব দেন। নিখিলবাবুর আশা, সোমবার মর্গ সংস্কারের জট কেটে যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement