শিল্পী স্বপন দত্ত। নিজস্ব চিত্র।
একতারার সুরই তাঁর হাতিয়ার। সরকারি প্রকল্প থেকে ডেঙ্গি, ডাইনি প্রথা থেকে ভোটদানের প্রয়োজনীতা— বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জেলার নানা প্রান্তে প্রচার চালাতে দেখা গিয়েছে বর্ধমানের খাজা আনোয়ার রোডের চল্লিশোর্ধ্ব বাউল শিল্পী স্বপন দত্তকে। এ বার পথে নামলেন মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তুলতে।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে নিজের লেখা গান নিয়ে জেলা জুড়ে প্রচারে করেছিলেন স্বপনবাবু। পরে রাজ্য জুড়ে ডেঙ্গির দাপট শুরু হলে, তা থেকে বাঁচতে সতর্কতা ও জ্বর হলে রক্ত পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা নিয়েও তাঁর প্রচার নজর কেড়েছিল বাসিন্দাদের। স্বপনবাবু জানান, এ সবই তিনি করেন মনের টানে। লোকশিল্পী হিসেবে রাজ্য সরকারের দেওয়া মাসিক এক হাজার টাকা ভাতা ছাড়া অতিরিক্ত কোনও টাকা এই সব প্রচারের জন্য পান না। বরং, প্রচারে বের হলে নিজের কিছু টাকা খরচ হয়। তবে, শিল্পী হিসেবে সমাজের প্রতি তাঁর দায়িত্ব রয়েছে। সে জন্যই পথে নামা।
উৎসবের মরসুমে প্রতি বছরই বাড়ে মাদকের রমরমা। তাই এ বার তিনি বিভিন্ন মাদকের ক্ষতিকারক প্রভাব নিয়ে ২০টি গান লিখেছেন। কালনা শহরের পুরসভা, চকবাজার, খেয়াঘাট, পুরনো বাসস্ট্যান্ড,আদালত চত্বর-সহ বিভিন্ন এলাকায় একতারা হাতে সেই গানগুলি গেয়ে প্রচার চালিয়েছেন স্বপনবাবু। ‘মদের নেশা সর্বনাশা, দেহে রোগজীবাণু বাঁধে বাসা’, ‘মদের নেশা থেকে দূরে থাক অবুঝ মন, ক্যানসার দেহে বাঁধবে বাসা, অকালে হবে মরণ’— এমন সব গান শুনে পথচলতি মানুষও দাঁড়িয়ে পড়ছেন। ভিড় জমাচ্ছেন বিভিন্ন বয়সীরা। স্বপনবাবু জানান, কালনা শহরে মাদকাসক্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার খবর নজরে পড়েছে। তাই প্রচার শুরুর জন্য কালনা শহরকেই বেছে নিয়েছিলেন তিনি।
জেলা সভাধিপতি দেবু টুডুর আশ্বাস, স্বপনবাবুর উদ্যোগে তাঁরাও পাশে থাকবেন। জেলার যে ব্লকে স্বপনবাবু প্রচারের কাজে যাবেন, সেখানেই তাঁর থাকা-খাওয়ায় ব্যবস্থা করা হবে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।