অন্ধকার বর্ধমান রেলসেতু। —নিজস্ব চিত্র।
বহু দিন ধরেই অন্ধকারে ডুবে থাকে এলাকা। পুরসভায় বার বার জানিয়েও কাজ হয়নি। এ বারেও পরিস্থিতি না পাল্টালে পুরপ্রধানকে ঘেরাও করার হুঁশিয়ারি দিলেন দলেরই কাউন্সিলর। সাংবাদিকদের কাছে কাউন্সিলর নুরুল আলম বলেন, ‘‘পুরপ্রধানকে সাত দিন সময় দিচ্ছি। যদি আলো লাগানো না হয়, তাহলে এলাকাবাসীদের নিয়ে পুরপ্রধানকে ঘেরাও করে রাখা হবে। উনি পুরসভায় ঢুকতে পারবেন, কিন্তু বেরোতে পারবেন না।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বর্ধমান পুরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডে দীর্ঘ দিন ধরেই আলোর সমস্যা রয়েছে। রেল ওভারব্রিজ থেকে শুরু করে শোলাপুকুর মসজিদ, শিবতলা, ময়দানে সন্ধ্যার পর থেকেই আলো জ্বলে না বলে অভিযোগ। রেলসেতু থেকে গোলাপবাগের দিকে জিটি রোডেরও একই হাল। বিষয়টি নিয়ে গত বছর সেপ্টেম্বর এবং এ বছরের মে মাসে পুরসভায় চিঠি পাঠান ওই কাউন্সিলর। তার পরেও লাভ হয়নি।
চিঠিতে ওই কাউন্সিলর দাবি করেছেন, যে সংস্থাকে আলো রক্ষণাবেক্ষনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তাঁরা দেখাশোনার নামে শুধুই নিজেদের কোম্পানির বিজ্ঞাপন করছে। সমস্ত বাতিস্তম্ভে নিজেদের কাঠামো লাগিয়েছে, কিন্তু কাজের কাজ করছে না। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে রেলসেতু থেকে কালনা, কাটোয়া ও গোলাপবাগ যাওয়ার রাস্তাতেও সব আলোও জ্বলে না। বিকল হাইমাস্ট বাতিও। নুরুল চিঠিতে জানিয়েছেন, ‘আমি বক্তিগত ভাবে বহুবার উক্ত সংস্থাকে এই মর্মে অভিযোগ করেছি, কিন্তু সংস্থার কর্মকর্তারা কর্ণপাত করেননি। ওই সংস্থা বর্ধমান সাজানোর নামে ব্যাবসায়িক মুনাফা লুটতে ব্যস্ত’।
পুরসভার যদিও দাবি, চার নম্বর ওয়ার্ডের ৩০০ মিটার কেবল লাইনে ত্রুটি দেখা দিয়েছে। ওই তার পরিবর্তন করতে সময় লাগছে। পুরপ্রধান পরেশচন্দ্র সরকার বলেন, ‘‘বর্তমানে একটা বাল্ব বদলাতে গেলেও কলকাতা থেকে অনুমোদন করাতে হয়। এতে দেরি হয়। যে এজেন্সি বা কর্মীদের দিকে অভিযোগ, তাদের কাজ নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় ইতিমধ্যেই শো-কজ় করা হয়েছে। জবাব না পেলে এ সপ্তাহেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ শহরের যে যে জায়গায় আলোর সমস্যা রয়েছে, তা চিহ্নিত করে আলো লাগানো হবে বলেও জানান তিনি।
আর ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি নিয়ে তাঁর দাবি, ‘‘এলাকার মানুষ পরিষেবা না পেলে, কাউন্সিলর রাগ করবেন এটাই স্বাভাবিক। উনি ওঁর ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন। আমরাও যথাসাধ্য চেষ্টা করছি বিষয়টি মিটিয়ে দেওয়ার।’’
বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিরোধীরা। বিজেপির জেলা সম্পাদক অভিজিৎ তা বলেন, ‘‘রাস্তার হাল খারাপ, আলো নেই, নিকাশি ঠিক নেই, এ সব নিয়ে আমরা অভিযোগ করতাম। এখন দলের লোকরাই বলছেন।’’
সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়েরও দাবি, ‘‘এখন আর আমাদের ঘেরাও করতে হবে না। দলের কাউন্সিলরেরাই দায়িত্ব নিয়েছেন। মানুষ কী পরিষেবা পাচ্ছেন, এটাই তার প্রমাণ।’’