দাঁইহাট পুরসভায় বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
শহরের জঞ্জাল ঠিকমতো সাফ হয় না, অভিযোগ করেন বাসিন্দাদের অনেকে। সাফাইকর্মীদের একাংশ নিয়মিত কাজে আসেন না, এমন অভিযোগ নিয়ে পুরসভার কর্তারাও বিরক্ত ছিলেন। তাই, এলাকায় ফিরে আসা কিছু পরিযায়ী শ্রমিককে কাজে লাগিয়ে শহর পরিষ্কারের চিন্তা-ভাবনা শুরু করেছেন পূর্ব বর্ধমানের দাঁইহাট পুরসভা কর্তৃপক্ষ। এ খবর জানার পরেই বুধবার সকালে পুরসভার সামনে অবস্থান-বিক্ষোভে বসলেন সাফাইকর্মীদের একাংশ। পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজে নিয়োগ না করার দাবির পাশাপাশি, দৈনিক মজুরি ৪০০ টাকা করার দাবি তোলেন তাঁরা। পুরসভার অন্য বিভাগের কর্মীর সঙ্গে বচসাও বেধে যায়।
পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দাঁইহাট পুরসভার ১৪টি ওয়ার্ডের নানা জায়গায় রাস্তাঘাট, পুকুর, নর্দমা সাফ করা হয় না বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ রয়েছে। রাস্তার পাশে আবর্জনা জমে দূষণ ছড়ায় হয়ে ওঠে। কোনও কোনও এলাকায় চার-পাঁচ দিন পরপর সাফাইকর্মীরা গিয়ে কোনও রকমে কাজ সারেন বলেও অভিযোগ। বেশ কিছু দিন ধরেই শহর পরিচ্ছন্ন রাখার দাবিতে অনেকে পুরসভায় লিখিত আবেদন জানিয়েছেন।
‘লকডাউন’ পরিস্থিতিতে অনেক পরিযায়ী শ্রমিক এলাকায় ফিরে কর্মহীন রয়েছেন। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁদের কাজে লাগিয়ে শহর পরিষ্কার করা যায় কি না, তা নিয়ে এক প্রস্ত আলোচনা হয়েছে। শহর সাফ রাখতে ১২০ জন কর্মী রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ৪০ জন মহিলা। নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিদিন সকালে শহরের রাস্তায় ঝাড়ু দেওয়া, নর্দমার আবর্জনা তুলে নিদিষ্ট জায়গায় গিয়ে ফেলার কথা। কিন্তু এ কাজে দিনের পর দিন গাফিলতি দেখা যায় বলে অভিযোগ।
বুদ্ধ হরিজন, প্রতাপ শেখ নামে সাফাইকর্মীদের অবশ্য দাবি, করোনা- সংক্রমণ উপেক্ষা করেই তাঁরা শহর পরিষ্কারের কাজ করছেন। তবু তাঁদের ‘ছাঁটাই করে’ পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজে লাগানোর পরিকল্পনা চলছে। তা করা চলবে না বলে দাবি তাঁদের। এ ছাড়া, দৈনিক ৪০০ টাকা মজুরি, কাজে স্থায়ীকরণ, মৃত সাফাইকর্মীদের পরিবারের সদস্যকে কাজ দেওয়া ও অতিরিক্ত কাজ করানো না করানোর দাবিতে এ দিন তাঁরা পুরসভার সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বলে জানান।
দাঁইহাট পুরসভার প্রশাসক শিশিরকুমার মণ্ডলের বক্তব্য, ‘‘শহরের নানা প্রান্ত থেকে অভিযোগ আসছে, ঠিকমতো সাফাই হচ্ছে না। আমি সরেজমিনে খতিয়ে দেখেছি, সাফাইকর্মীদের কেউ-কেউ এক দিন কাজে আসছেন, তো তিন দিন আসছেন না। ওই সমস্ত কর্মীদের চিহ্নিত করে বসিয়ে দেওয়া হবে। পরিবর্তে পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজে নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।’’ সাফাইকর্মীদের দাবি মতো দৈনিক ৪০০ টাকা মজুরি দেওয়া সম্ভব নয় বলেও জানান তিনি।