কুয়োর জলে রান্না মিড-ডে মিল, নালিশ কমলপুরে

দুর্গাপুরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কমলপুরে বাস করে পাথর খাদানে কাজ করা শ্রমিকদের শ’খানেক পরিবার। পানীয় জলের জন্য প্রধান ভরসা এলাকার পাঁচটি কুয়ো। জুলাইয়ের শেষ থেকে জ্বর ও পেটের রোগের প্রকোপ দেখা দেয় তাঁদের অনেকের। জনা পঞ্চাশকে ভর্তি করানো হয় দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে। জলবাহিত রোগ থেকেই সংক্রমণ বলে জানান চিকিৎসকেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৯ ০১:৪৮
Share:

ব্যবহৃত হয় এই কুয়োর জল, দাবি বাসিন্দাদের। নিজস্ব চিত্র

জলের সমস্যা থেকে কয়েকদিন আগেই পেটের রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন এলাকার বেশ কিছু বাসিন্দা। দুর্গাপুরের কমলপুরে স্বাস্থ্যশিবিরের পাশাপাশি বাসিন্দাদের সচেতন করতেও পদক্ষেপ করেছিলেন প্রশাসনের কর্তারা। কিন্তু সেই এলাকাতেই প্রাথমিক স্কুলের মিড-ডে মিল কুয়োর জলে রান্না হচ্ছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।

Advertisement

দুর্গাপুরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কমলপুরে বাস করে পাথর খাদানে কাজ করা শ্রমিকদের শ’খানেক পরিবার। পানীয় জলের জন্য প্রধান ভরসা এলাকার পাঁচটি কুয়ো। জুলাইয়ের শেষ থেকে জ্বর ও পেটের রোগের প্রকোপ দেখা দেয় তাঁদের অনেকের। জনা পঞ্চাশকে ভর্তি করানো হয় দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে। জলবাহিত রোগ থেকেই সংক্রমণ বলে জানান চিকিৎসকেরা।

এলাকায় পুরসভার কল রয়েছে। কিন্তু বাসিন্দারা জানান, যে সামান্য জল আসে তাতে চাহিদা মেটে না। কুয়োর জলই ভরসা। স্থানীয় কমলপুর প্রাথমিক স্কুলের চত্বরে একটি কুয়ো রয়েছে। মিড-ডে মিল রান্নার জল নেওয়া হয় সেই কুয়ো থেকেই। সেটি গ্রিল দিয়ে ঢেকে রেখেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। তবে ওই জলে সব প্রয়োজন মেটে না। স্কুলের সীমানায় রয়েছে আর একটি কুয়ো। সেই জল মিড-ডে মিলের কাজে ব্যবহার করা কতটা ঠিক, প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকেরা।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দ্বিতীয় কুয়োটি তাঁরাও ব্যবহার করেন। কুয়োর এক দিকে জামাকাপড় কাচা থেকে স্নান, নানা দৈনন্দিন সব কাজ সারেন এলাকার অনেকে। অন্য দিকে স্কুলের মিড-ডে মিলের বাসনপত্র ধোয়া-সহ নানা কাজ চলে। এই কুয়োর জল মিড-ডে মিলের কাজে ব্যবহারের ফলে পড়ুয়াদের সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা অভিভাবকদের।

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক সত্যব্রত নাথ অবশ্য বলেন, ‘‘কুয়োর জল ব্যবহার করা ছাড়া গতি নেই। কারণ, সকালে যখন ট্যাপকলে জল আসে তখন স্কুল খোলে না।’’ তিনি জানান, পাইপলাইনে জলের সরবরাহ কখনও স্বাভাবিক হলে স্কুলে জলাধার গড়ে জল মজুতের ব্যবস্থা গড়ে সমস্যা মেটানো যেতে পারে। যত দিন তা না হচ্ছে, কুয়োর জলেই কাজ সারতে হবে বলে জানান তিনি।

মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) অনির্বাণ কোলে বলেন, ‘‘সম্প্রতি জলবাহিত রোগের সংক্রমণ হয়েছিল ওই এলাকায়। জলের জন্য স্কুলের পড়ুয়াদের মিড-ডে মিল থেকে সংক্রমণের আশঙ্কা থাকতে পারে। সে জন্য এলাকায় পরিস্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে পুরসভাকে।’’ পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকার ভৌগোলিক অবস্থানের জন্য পাইপলাইনের জলের সরবরাহ ঠিক ভাবে পৌঁছয় না। ট্যাঙ্কারে পানীয় জল পাঠানো ছাড়াও বিকল্প কী করা যায়, ভাবনাচিন্তা চলছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement