সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। —ফাইল চিত্র।
মুখ ফিরিয়ে থাকা বাম কর্মীদের দলে ফেরার আর্জি জানালেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। বৃহস্পতিবার বিকেলে মেমারি শহরে প্রয়াত দলীয় নেত্রী মহারানি কোনারের স্মরণসভায় এই আহ্বান জানান তিনি। সভায় ছিলেন অমল হালদার, অচিন্ত্য মল্লিক, সৈয়দ হোসেন এবং প্রয়াত নেত্রীর পরিজনেরা।
তৃণমূল-বিজেপির সমালোচনার পাশাপাশি, মেমারি শহরে রেলগেটে যানজটের সমস্যাও তুলে ধরেন সেলিম। তিনি বলেন, “লেভেল ক্রসিংয়ে রেল ওভারব্রিজ হবে বলে মেমারিতে আওয়াজ উঠল। রাস্তার ধারে থাকা গাছ বিক্রি করে দেওয়া হল। সেই টাকার হিসাব কিন্তু নেই। রেল ওভারব্রিজও হল না।”
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ তোলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষ বাড়ির জন্য টাকা জোগাড় করতে পারছেন না, আর টাকা রাখার জন্য তৃণমূল নেতারা বাড়ি তৈরি করছেন। পরিবর্তনের নামে পঞ্চায়েত, পুরসভায় লুট হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে এক হতে হবে।”
লোকসভা ভোটে তৃণমূল-কংগ্রেস-সিপিএম এক হয়েছে বলে প্রচার শুরু করেছে গেরুয়া শিবির। আবার সিপিএমকে বিজেপির ‘বি টিম’ বলে কটাক্ষ করছে তৃণমূল। সেই প্রেক্ষিতে সেলিমের বক্তব্য, “সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়তে গেলে দুর্নীতিগ্রস্তদের পাশে থাকলে হবে না। দুর্নীতিকে আড়াল করতেই সাম্প্রদায়িকতাকে খাড়া করা হয়।” তার পরেই সেলিমের আহ্বান, “যাঁরা এখনও মুখ ফিরিয়ে রয়েছে, চলে গিয়েছিলেন বাজার খারাপ দেখে, সবাইকে জড়ো করতে হবে। তাঁরাও অভিজ্ঞতা দিয়ে বুঝবেন। তাঁরা ফিরছেন।”
কোনার পরিবারের তরফে সিপিএম, দলের শাখা সংগঠন ও মুখপত্রের জন্য কয়েক লক্ষ টাকার চেক দেওয়া হয় এ দিন। দল ও সমাজে মহারানির অবদানের কথা মনে করিয়ে দিয়ে অমল বলেন, “তিনি আধা-ফ্যাসিবাদী সন্ত্রাসের সময় থেকে লুটেরাদের আমল, সব সময়ই রাস্তায় ছিলেন। তিনি চাইতেন, মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে তাঁদের সমস্যা নিয়ে আলোচনা হোক। সেই সমস্যার কথা তুলে ধরে রাস্তায় থাকতে হবে।”
সেলিমের অভিযোগ প্রসঙ্গে তৃণমূলের মেমারি শহর সভাপতি স্বপন ঘোষালের প্রতিক্রিয়া, “মেমারি শহরের মানুষ জানেন সিপিএম কতটা অত্যাচারী আর কতটা দুর্নীতিগ্রস্ত। সিপিএমের কথা কেউ শুনবে না।” বিজেপির নগর মণ্ডল সভাপতি বিশ্বজিৎ বসুর দাবি, “যাঁরা দূরে সরে গিয়েছেন, তাঁরা সিপিএমের ঘরে ফিরবেন না।”