জ্বলছে না এই সব আলো। কালনায়। নিজস্ব চিত্র
সন্ধে নামলেই ঝলমল করে উঠত চত্বর। মায়াবি সেই পরিবেশের টানে শুধু শহরবাসী নন, বাইরে থেকেও মানুষজন আসতেন। কিন্তু সপ্তাহখানেক ধরে সেই আলোয় আর সেজে উঠছে না কালনার রাজবাড়ি চত্বর। সেই সুযোগ নিয়ে এলাকায় নানা কুকর্মও শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
কালনার রাজবাড়ি চত্বরের এক দিকে রয়েছে ১০৮ শিবমন্দির। অন্য দিকে প্রতাপেশ্বর মন্দির, লালজি মন্দির, কৃষ্ণচন্দ্র মন্দির, গিরিগোবর্ধনের মন্দির, রাসমঞ্চের মতো বিভিন্ন পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন। রাতে সেগুলি আকর্ষণীয় করে তুলতে বছর তিনেক আগে পর্যটন দফতর আধুনিক আলো বসায়। মন্দিরের চরিত্র অনুযায়ী ছোট-বড় স্তম্ভ করে বসানো হয় আলোগুলি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাস তিনেক আগে থেকে বেশ কিছু আলো নিভতে শুরু করে। কোন-কোন মন্দিরে কত আলো নষ্ট হয়ে গিয়েছে, সে ব্যাপারে মহকুমা প্রশাসন একটি তালিকা তৈরি করে জেলায় পাঠায়। ২২ জানুয়ারি থেকে আচমকা বন্ধ হয়ে যায় সমস্ত আলো। এখন রাজবাড়ি চত্বরে দু’একটি ছোট বাতিস্তম্ভে অল্প আলোর বাল্ব থাকলেও সেই আলোয় মন্দির ভাল ভাবে দেখা য়ায় না। কিছু জায়গায় রাস্তাও অন্ধকার। ১০৮ শিবমন্দিরে আঁধার থেকে কিছুটা রেহাই পাচ্ছে বাইরে থাকা পুরসভার একটি বড় আলোর সৌজন্যে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, লাগোয়া মাঠে কয়েক মাস ধরে সন্ধে নামতেই বেশ কিছু তরুণ-তরুণীর ভিড় করছে। নেশা-সহ নানা দুষ্কর্ম চলছে। রমলা চট্টোপাধ্যায় নামে এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘কিছু যুবক ওখানে কটূক্তি, অশালীন আচরণ করে। মন্দিরের দরজা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তারা এলাকায় দাপিয়ে বেড়ায়।’’ বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এনেও লাভ হয়নি। সরস্বতী পুজোর সময়ে পুলিশ মোতায়েন থাকায় দৌরাত্ম্য কম ছিল। কিন্তু এখন আলো নিভতেই ফের শুরু তা হয়েছে।
রাজবাড়ি চত্বরের দেখভালের দায়িত্বে থাকা পুরাতত্ত্ব বিভাগের এক কর্মী বলেন, ‘‘কেন আচমকা আলোগুলি নিভে গেল জানি না। সন্ধে নামতেই তরুণ-তরুণীর ভিড় জমছে।’’ পুরসভা জানায়, মাটির তলা দিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের কেব্ল নষ্ট হয়ে যাওয়ার জন্যই আলো জ্বলছে না। পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ বলেন, ‘‘যারা আলো লাগিয়েছিল, সেই সংস্থার সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। দ্রুত সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চলছে।’’