চাপ সামলাতে অনেক সময় একটি শয্যায় বেশ কয়েক জন প্রসূতিকে রাখতে হয় এক সঙ্গে। এর ফলে ভয় থাকে সংক্রমণ ছড়ানোর। সম্প্রতি এই সব সমস্যা সমাধানে আসানসোল জেলা হাসপাতালের স্ত্রী রোগ, প্রসূতি ও শিশু বিভাগ ঢেলে সাজার পরিকল্পনা হয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানানো হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, সম্প্রতি এই বিষয়ে রাজ্যের উপ-স্বাস্থ্য সচিব জলি চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি দল হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। সেই দলে ছিলেন জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের দু’জন সদস্যও। সচিব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বেশ কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছেন বলে খবর।
কী কী পরিকল্পনা রয়েছে? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, আসানসোল স্বাস্থ্যজেলা হিসেবে ঘোষণার পরেই ঠিক হয়, হাসপাতালে একটি ‘মা ও শিশু হাব’ তৈরি করা হবে। সুপার নিখিলচন্দ্র দাস জানান, শিল্পাঞ্চলের পাশাপাশি বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূমের মতো নানা জেলা, এমনকী পাশের রাজ্য ঝাড়খণ্ড থেকেও বহু প্রসূতি আসানসোলে আসেন। রোগীর সংখ্যার কারণে অনেক সময়ে পরিষেবা দিতে হিমসিম হন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা।
নিখিলবাবু জানান, হাসপাতালে আধুনিক সরঞ্জাম বসানো হচ্ছে। প্রসূতি বিভাগের শয্যা সংখ্যা ৫৬ থেকে বাড়িয়ে ১৪০ এবং নবজাতকদের জন্য তৈরি ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের শয্যা সংখ্যা ২৮ থেকে বাড়িয়ে ৫০টি করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রসবকালীন কক্ষের শয্যা সংখ্যা চার থেকে বাড়িয়ে নয় করা হচ্ছে। এ ছাড়াও থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসার জন্য একটি সংক্রমণহীন কক্ষ তৈরি হবে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মাল্টি সুপার স্পেশ্যালিটি বিভাগ চালুর পরে পুরনো হাসপাতাল ভবনে এই পরিকল্পনাগুলি বাস্তবায়িত করা হবে। নিখিলবাবুর আশা, ‘‘পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে প্রসূতি ও নবজাতকদের আরও ভাল স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে পারব।’’
কর্তাদের দাবি, চলতি বছরেই হাসপাতালের মাল্টি সুপার স্পেশ্যালিটি ভবন তৈরির কাজ শেষ হবে। ওই নতুন ভবনে পুরনো হাসপাতাল থেকে বহির্বিভাগ, শল্য এবং মেডিসিন বিভাগকে তুলে আনা হবে। তার পরে ওই পুরনো ভবনে স্ত্রী রোগ, প্রসূতি ও শিশু বিভাগটি ঢেলে সাজা হবে। এ ছাড়াও আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ট্রমা ইউনিটটি চালু হয়ে যাবে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আশা।