আগুনের গ্রাসে। কালনার জিউধরা এলাকায় তোলা নিজস্ব চিত্র।
আগুন ধরলে বড়সড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কাটা চিলই ব্যবসায়ীদের মধ্যে। কারণ গোটা বাজার জুড়েই যে রয়েছে কাঠ, প্লাস্টিক, টিনের অজস্র ছাউনি। শেষমেশ ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা সত্যি করেই মঙ্গলবার ভোরে কালনা শহর লাগোয়া জিউধারা এলাকার নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির কমপ্লেক্সে ৯টি দোকান আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গেল। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, নিয়মিত টোল দিয়েও প্রশাসনের তরফে কংক্রিটের দোকান তৈরির অনুমতি দেওয়া হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ভোরে রাম বাছার নামে এক কলা ব্যবসায়ী বাজারের বেশ কয়েকটি দোকান থেকে গলগল করে ধোঁয়া বেরোতে দেখেন। রামবাবু বলেন, ‘‘রাতে ম্যাটাডর বোঝাই করে কলা আসে। তা গুদামে ঢুকিয়ে খানিক ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম। ভোর ৪টে নাগাদ ঘুম ভেঙে যাওয়ার পর দেখি মাছবাজার লাগোয়া পট্টির বেশ কয়েকটি দোকান থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে।’’ এরপরই চিৎকার জুড়ে দেন রামবাবু। তাঁর চিৎকার শুনে জড়ো হয়ে যান অন্যান্যরাও। খবর দেওয়া হয় দমকলে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, দমকলের ইঞ্জিন আসতে ঘণ্টাখানেক দেরি হয়েছে। শেষমেশ দমকলের একটি ইঞ্জিন প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। দমকলের প্রাথমিক অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন ধরে যায়।
বাসিন্দারা জানান, বাজার কমপ্লেক্সের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে পাইকারি ও খুচরো ব্যবসা চলে। রয়েছে সব্জির অনেকগুলি আড়ত। বাজার কমিটির সম্পাদক লাল্টু দাসের অভিযোগ, ‘‘টোল দিয়েও কংক্রিটের দোকানঘর করতে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। ফলে বাধ্য হয়েই কাঠ, প্লাস্টিকের মতো দাহ্য বস্তুর তৈরি ছাউনির নীচেই চলে বেচা-কেনা।’’ ব্যবসায়ীদের দাবি, দোকানঘরগুলি কংক্রিটের হলে এত বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হতো না।
ব্যবাসীয়রা জানান, আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে সব্জি, লেপ তোষক-সহ বিভিন্ন সরঞ্জামের ৯টি দোকান। ব্যবসায়ীদের দাবি, এই ঘটনায় প্রায় ২০ লক্ষ টাকার জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
এ দিন বাজার পরিদর্শনে যান কালনার বিদায়ী বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু। তাঁকে সামনে পেয়ে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন দাবিদাওয়ার কথা জানান। বিশ্বজিৎবাবু মহকুমাশাসক-সহ প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে স্মারকলিপি দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানান ব্যবসায়ীরা।