বৃষ্টির পরে এমন হাল হয় শহরের বহু রাস্তার। ফাইল চিত্র
ভোট আসে, ভোট যায়। কিন্তু দুর্গাপুরের নানা এলাকার জল জমার ছবি পাল্টায় না। প্রতি বছর জলমগ্ন হয়ে পড়াই ভবিতব্য বলে মনে করেন বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, এই পরিস্থিতি থেকে রেহাইয়ের ব্যবস্থা করেনি কোনও পুরবোর্ডই।
দুর্গাপুর পুরসভায় ২০১২ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিল বামফ্রন্ট। ওই বছর ভোটে জিতে বোর্ড গড়ে তৃণমূল। নাগরিকদের অনেকেরই দাবি, এলাকার নানা সমস্যা মিটবে বলে আশা করেছিলেন তাঁরা। যার মধ্যে অন্যতম ছিল জলমগ্ন হওয়া। শহরের নানা এলাকায় সমস্যা বিভিন্ন রকমের। কিন্তু সামান্য বৃষ্টিতেই জল জমে যাওয়ার চিত্রটা বিধাননগর, সিটি সেন্টার থেকে রাতুরিয়া-অঙ্গদপুর— সর্বত্র প্রায় এক রকম।
এ বছরও বর্ষার শুরুতে জলমগ্ন হয়ে পড়ে নানা এলাকা। ২০ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রীনগরপল্লি, বিবেকানন্দপল্লি, ১৩ ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের মেনগেট, কাদা রোড, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের নিবেদিতা পার্কের বাসিন্দারা বেশি ভুক্তভোগী হন। এ ছাড়া মুচিপাড়া, আরআইপি প্লট, সগড়ভাঙা, মায়াবাজার-সহ বিভিন্ন এলাকাও জলমগ্ন হয়ে পড়ে। বেশ কিছু বাড়িতে জল ঢুকে যায়। নিবেদিতা পার্কের বাসিন্দা সজল মণ্ডল, মণীষা রায়েরা বলেন, ‘‘এ বারই প্রথম নয়। প্রতি বছর এক সমস্যা। পুরসভায় বারবার জানিয়েও ফল হয়নি।’’
গত বছর বর্ষায় শহরের বহু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ার পরে পুরসভার তরফে নানা উদ্যোগ হয়েছিল। কিন্তু এ বার ফের বর্ষা নামতেই সেই এক ছবি ফুটে ওঠে। নাগরিকদের একাংশের মতে, নিকাশি নর্দমাগুলি ঠিকমতো সংস্কার না হওয়ার জন্যই এই পরিস্থিতি। পুরসভার বিদায়ী বিরোধী দলনেতা সিপিএমের শিবশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, গত পুরবোর্ড শহরের উন্নয়নে কোনও কাজই করেনি। নিকাশির সমস্যা সমাধানেও কোনও উদ্যোগ হয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা এ বিষয়ে বহু বার পুরসভাকে জানিয়েছি। কিন্তু কোনও ফল হয়নি।’’
যদিও বিরোধীদের দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন বিদায়ী ডেপুটি মেয়র অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি পাল্টা দাবি করেন, সব পরিকাঠামোই বাম আমলে তৈরি। কোনও পরিকল্পনা ছাড়া সেগুলি তৈরি করা হয়েছে। যার ফল ভুগছেন শহরবাসী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরা বিভিন্ন এলাকায় নিকাশির সমস্যা দূর করেছি। আগে যত এলাকা জলমগ্ন হতো, এখন আর ততটা হয় না।’’