এই নির্মাণ নিয়ে বিতর্ক। —নিজস্ব চিত্র
আগেও সোশ্যাল মিডিয়ায় মন্তেশ্বর ব্লকের তৃণমূল নেতাদের দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রীর দাদা দেবপ্রিয় মল্লিক। এ বার মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়ে তাঁর অভিযোগ, রাজ্য সরকার যেখানে ‘জল ধরো, জল ভরো’ প্রকল্পে গোটা দেশে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে সেখানে দিনের বেলায় জলাজমি ভরাট করে দেওয়া হচ্ছে মন্তেশ্বরের কুসুমগ্রামে। স্থানীয় তৃণমূল নেতা বাবলু খান এ কাজে জড়িত বলেও দাবি করা হয়েছে চিঠিতে। ওই নেতা অভিযোগ মানেননি।
মন্তেশ্বরের তৃণমূল ব্লক সভাপতি আজিজুল হকের দাবি, ‘‘দল দুর্নীতি বরদাস্ত করে না। কারও, কোনও অভিযোগ থাকলে মুখ্যমন্ত্রীকে জানানোর সুযোগ তো রয়েছে।’’
৮ অগস্ট দেবপ্রিয়বাবু এবং মন্তেশ্বরের গ্রামবাসীদের একাংশের তরফে ওই চিঠি পাঠানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে। দেবপ্রিয়বাবুর দাবি, ‘‘কুসুমগ্রামের মতো জনবহুল এলাকায় প্রকাশ্যে পুকুর বোজানোর কাজ হচ্ছিল। অথচ বিষয়টি নিয়ে পঞ্চায়েত, বিএলআরও, বিডিও কেউ কিছু করেননি। আমি জানতে পারার পরে জায়গাটির কিছু নথিপত্র দেখে নিই। এর পরেই মুখ্যমন্ত্রীকে একটি অভিযোগ পত্র পাঠানো হয়েছে।’’ মাস দুয়েক আগেও মন্তেশ্বরে পঞ্চায়েতের দুর্নীতি ও সমাজবিরোধী নানা কাজের অভিযোগে পুলিশ এবং বিডিওর বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়েছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘অনেকেই সরাসরি অভিযোগ জানাতে ভয় পাচ্ছেন। কিন্তু মন্তেশ্বরের দুর্নীতি নিয়ে কথা বলতে কাউকে না এগিয়ে আসতে হতো।’’ যদিও অভিযুক্ত বাবলু খানের দাবি, নিজের বাস্তুজমিতে নির্মাণ কাজ করছেন তিনি। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে অভিযোগ করা হয়েছে, দাবি তাঁর।
লোকসভা ভোটের পর থেকেই মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি আহমেদ শেখ-সহ বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে নানা পোস্ট দেখা যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। কোনও পোস্টের নীচে লেখা ছিল জনস্বাস্থ্য ও স্বাধিকার মঞ্চের কর্মীরা, আবার কোথাও লেখা ছিল মন্তেশ্বরের জনগন। সরকারি প্রকল্পের টাকা কী ভাবে নয়ছয় হয়েছে, এলাকায় দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব, প্রশাসনিক নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ ছিল পোস্টগুলিতে।
জামনা পঞ্চায়েতের মড়াইপিরি গ্রামে তৃণমূল নেতা সৌরভ ঘোষের নামেও নানা সরকারি প্রকল্পে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ তুলে এলাকার ৭১ জন বাসিন্দা মুখ্যমন্ত্রীকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে কোন কোন প্রকল্পে প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য দুর্নীতি করেছেন তার বিবরণ রয়েছে। গ্রামের একাধিক জায়গায় পোস্টার সাঁটিয়েও দাবি করা হয়েছে, ওই নেতাকে আট লক্ষ টাকা ফেরত দিতে হবে। যদিও সৌরভবাবুর দাবি, বিজেপি পরিকল্পনা করে এ সব মিথ্যা অভিযোগ করেছে।
তৃণমূল ব্লক নেতৃত্বের দাবি, দলের কাছে কেউ কোনও অভিযোগ জানাননি। খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। বিজেপির দাবি, সাধারণ মানুষই মুখ খুলেছেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে।