জল সংরক্ষণে দিশা দেখাচ্ছেন বুদবুদের অমিতাভ

বুদবুদের অ্যামুনেসন রোডের বাসিন্দা অমিতাভবাবু পানাগড় সেনা ছাউনির অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। তিনি জানান, পরিবেশ বাচাতে গাছ লাগানোর পাশাপাশি জল সংরক্ষণও জরুরি। বৃষ্টির জল ধরে রেখে তা ব্যবহার করলে ভূগর্ভস্থ জল বাঁচানো যাবে।

Advertisement

বিপ্লব ভট্টাচার্য

বুদবুদ শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৯ ০১:০০
Share:

বাড়িতেই বৃষ্টির জল সংরক্ষণ। নিজস্ব চিত্র

গরমের সময় জেলার নানা প্রান্তে জলস্তর নেমে গিয়েছিল। জলের দাবিতে বিক্ষোভ-অবরোধ পর্যন্ত হয়েছে। তাই জল-অপচয় রুখতে প্রশাসনের তরফে সচেতনতা প্রচার চালানো হয়। পাশাপাশি জল সংরক্ষণের বিষয়েও জোর দেওয়া হয় সরকারের তরফে। বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করে কী ভাবে তা দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করা যায়, তা নিয়েও প্রচার চালানো হয় বিভিন্ন সময়ে। বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করে কী ভাবে নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার করা যায় তা করে দেখালেন বুদবুদের বাসিন্দা অমিতাভ দে। তাঁর উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রশাসনের কর্তারা।

Advertisement

বুদবুদের অ্যামুনেসন রোডের বাসিন্দা অমিতাভবাবু পানাগড় সেনা ছাউনির অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। তিনি জানান, পরিবেশ বাচাতে গাছ লাগানোর পাশাপাশি জল সংরক্ষণও জরুরি। বৃষ্টির জল ধরে রেখে তা ব্যবহার করলে ভূগর্ভস্থ জল বাঁচানো যাবে। মানুষের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দিতে তাঁর এই উদ্যোগ। তিনি বলেন, ‘‘বেশ কয়েক বছর ধরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় গরমের দিনে জলের তীব্র সঙ্কট দেখা দিচ্ছে। পুকুর, ডোবাতে জল শুকিয়ে যাচ্ছে। মানুষজনকে ভয়ানক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এ বছর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়। বৃষ্টির সময়ও জলসঙ্কট দেখা দিয়েছে। অথচ বৃষ্টি হলেও সেই জল কোনও ভাবে কাজে লাগানো হয় না। যদি মানুষজন বৃষ্টির জল ব্যবহার করেন সমস্যা অনেকটা মিটবে।’’

কী ভাবে জল সংরক্ষণ করছেন?

Advertisement

অমিতাভবাবু জানান, ছাদের উপরে সাদা সিমেন্ট দিয়ে চাতালের মতো করা হয়েছে। ছাদের জল নিকাশির মুখে জাল বসানো হয়েছে। ওই নিকাশির জল পাইপলাইনের মাধ্যমে নীচে রাখা ফাইবার ট্যাঙ্কিতে ভর্তি করা হয়। তিনি বলেন, ‘‘বাড়িতে দু’হাজার লিটারের দু’টি ও একটি পাঁচশো লিটারের ট্যাঙ্ক ছাদের জল ধরে রাখার জন্য বসানো হয়েছে। নোংরা যাতে না ঢোকে তার জন্য জাল লাগানো আছে। পান করা ছাড়া বাকি সব কাজ ওই জলে করা হয়। ফিল্টারের ব্যবস্থা করলেও সেই জলও পান করা যাবে।’’ তিনি জানান, ভারী বর্ষণে দু’টি ট্যাঙ্কি সম্পূর্ণ ভর্তি হয়ে যায়। তাতে দু’জনের পরিবারে ১০০ লিটার জল ব্যবহার করলে আপতত ৪০ দিন চলে যায়।

অমিতাভবাবুর কথায়, ‘‘বেশির ভাগ বাড়িতে বর্তমানে সাবমার্সিবল পাম্প রয়েছে। তার সাহায্যে জল তুলে সব কাজে ব্যবহার করা হয়। যদি বৃষ্টির জল ধরে তা ব্যবহার করা যায়, দেখা যাবে ৪০ দিনে চার হাজার লিটার জল ভূগর্ভ থেকে কম উত্তোলন হবে।’’

স্থানীয় বাসিন্দা বেণীমাধব মজুমদার বলেন, ‘‘প্রযুক্তির সহায়তায় বৃষ্টির জল পরিস্রুত করার ব্যবস্থা করা গেলে তা পানীয় জল হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষের সচেতন হওয়া উচিত।’’

জল সংরক্ষণ নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে ১২ জুলাই দিনটি ‘সেভ ওয়াটার ডে’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গলসি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি অনুপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খুব ভাল উদ্যোগ। গ্র‍ামাঞ্চলের মানুষও যে জল সংরক্ষণে এগিয়ে আসছেন খুবই প্রশংসনীয়। এখন একশো দিনের কাজেও বৃষ্টির জল সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’ অমিতাভবাবুকে দেখে আরও অনেকে এগিয়ে আসবেন বলে তিনি আশাবাদী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement