প্রতীকী চিত্র
জমি-বাড়ি সংক্রান্ত ১৯৭১ সালের নথিপত্র জোগাড় করতে কয়েকদিন ধরেই সরকারি অফিসে চরকিপাক খাচ্ছিলেন জামালপুরের টেঙ্গাবেড়িয়া গ্রামের কমল ঘোষ (৫৫)। শুক্রবার বিকেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। পরিবারের দাবি, জাতীয় নাগরিক পঞ্জি নিয়ে নানা প্রচার চলছে গ্রামে। তার মধ্যেই বসত ভিটের পুরনো নথি বার করা নিয়ে চিন্তায় ছিলেন পেশায় দিনমজুর কমলবাবু। তার জেরেই এই ঘটনা।
বর্ধমান দক্ষিণের মহকুমাশাসক সুদীপ ঘোষ বলেন, “এনআরসি নিয়ে অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। রাজ্য সরকার এ নিয়ে বিজ্ঞাপনও দিচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীও বলেছেন।’’ জামালপুরের প্রাক্তন বিধায়ক তথা জেলা পরিষদের ‘মেন্টর’ উজ্জ্বল প্রামাণিকও বলেন, “এনআরসি নিয়ে ভয় পাবেন না, আতঙ্কিত হবেন না—এই বার্তা দেওয়া হচ্ছে।’’
পরিবার সূত্রে জানা যায়, কমলবাবুর আদি বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতায়। সেখান থেকে কাজের সূত্রে স্বাধীনতার কয়েকবছর পরে টেঙ্গাবেড়িয়ার গয়লাপাড়ায় চলে আসেন তাঁর পরিবার। মৃতের ভাই ইতলবাবু বলেন, “এনআরসি আতঙ্ক আমাদের মধ্যেও রয়েছে। অনেকেই ১৯৭১ সালের আগে দলিল রাখার জন্য বলছে। সে জন্যই দাদা সরকারি অফিসে হন্যে হয়ে পড়ে থাকতেন।’’ পরিজনদের দাবি, বসত ভিটের নথি মিলছে না দেখে কমলবাবুর রাতের ঘুম, খাওয়া উড়ে গিয়েছিল। মৃতের স্ত্রী সন্ধ্যাদেবী বলেন, ‘‘শুক্রবার সকালে জামালপুর ব্লকে ডিজিটাল রেশন কার্ড করানোর জন্য গিয়েছিলেন উনি। ঠিকমতো নথি পেশ করতে পারেননি বলে আবেদনের ফর্মই জমা নেয়নি ব্লক। বাড়ি আসার পরে চিন্তা আরও জাঁকিয়ে বসেছিল।’’
জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভাপতি মেহেমুদ খানের দাবি, “এনআরসি নিয়ে বিজেপি মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে। সে জন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এই আতঙ্কই একটা প্রাণ কেড়ে নিল।’’ বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য ভীষ্মদেব ভট্টাচার্যের পাল্টা দাবি, “যা বলার, আমাদের দলের রাজ্য সভাপতি বলে দিয়েছেন। নতুন করে কিছু বলার নেই।’’