সূচনা: নতুন জেলা ঘোষণার সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ।
ক্ষমতায় আসার পরে এই জেলাকে তিনি অনেক কিছু দিয়েছেন। স্টেডিয়াম, মাল্টিসুপার হাসপাতাল, আইটিআই, ইএসআই হাসপাতাল থেকে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়— নতুন জেলা ঘোষণার মঞ্চ থেকে তালিকাটা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই। তবে জেলা ভাগেই কাজ শেষ নয়, সে কথাও শুক্রবার বক্তব্যে বুঝিয়ে দেন তিনি। আসানসোলের পুলিশ লাইন মাঠের সভা থেকে এ দিন দুই জেলার ৪৮টি প্রকল্পের শিলান্যাস ও ৩৭টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে বিভিন্ন কাজে গতি আনার জন্য নির্দেশ দিলেন প্রশাসনের আধিকারিক ও বিধায়ক-মন্ত্রীদেরও।
জল, টাউনশিপের জন্য
আসানসোলে সবচেয়ে বড় সমস্যা জল, নিজেই জানান মুখ্যমন্ত্রী। ধীরে-ধীরে সমস্যা মেটানো হবে বলে আশ্বাস তাঁর। তিনি জানান, কুলটিতে জলের সমস্যা মেটানোর জন্য ৩০২ কোটি টাকা অনুমোদন হয়েছে। এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটককে মঞ্চ থেকেই এই কাজের বিষয়টি দেখার নির্দেশ দেন তিনি। এ ছাড়া আসানসোলে স্যাটেলাইট টাউনশিপের জন্য ১৪৩ কোটি টাকা ও পার্শ্ববর্তী আরও কয়েকটি এলাকার জন্য ১৭৩ কোটি টাকার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
প্রাপ্তি এক নজরে
• মেমারি দমকল কেন্দ্রের উদ্বোধন।
• বর্ধমানে খাদ্য ভবন প্রকল্প।
• মেমারি- মন্তেশ্বর রাস্তার ৩১ কিমি সংস্কার ও সস্প্রসারণ।
• বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল সিটি স্ক্যান প্রকল্পের উদ্বোধন।
• ফুটিসাঁকো থেকে জাজিগ্রাম পর্যন্ত ৬ নম্বর রাজ্য সড়ক সংস্কার ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন।
• আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের উদ্যোগে কন্যাপুর স্যাটেলাইট টাউনশিপ সহ একগুচ্ছ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন।
• আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের উদ্যোগে দুর্গাপুর সিটিসেন্টার লেকের উপরে নতুন সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন।
• আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের উদ্যোগে আসানসোল ইএসআই হাসপাতালে বিএসসি নার্সিং কলেজ নির্মাণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন।
খনির ধসে উদ্বেগ
রানিগঞ্জ খনি এলাকার ধস কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। পুনর্বাসনের কাজ দেরি হয়ে গিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আর দেরি করা যাবে না। তলিয়ে যাওয়া থেকে বাসিন্দাদের রক্ষা করতে হবে।’’ তিনি জানান, প্রায় সাড়ে ৪৪ হাজার বাড়ি বানাতে হবে। প্রত্যেককে হয়তো মনোমতো জায়গায় সরানো যাবে না। এই কাজের জন্য উচ্চ পর্যায়ের কমিটিও তৈরি হয়েছে। তিনি আরও জানান, জেলায় ছোট শিল্পের জন্য ইতিমধ্যে ১০১২ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। স্বনির্ভরতার জন্য প্রায় ২২ হাজার তরুণ-তরুণী সাহায্য পেয়েছেন।
উদ্বোধন মিষ্টি হাবের
এ দিন বর্ধমানের বামচাঁদাইপুরের মিষ্টি হাবের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘বর্ধমানের ল্যাংচা, মিহিদানা, সীতাভোগের নাম সবাই জানেন। এই সব মিষ্টি বিশ্বের দরবারে পৌঁছে যাচ্ছে। সমস্ত মিষ্টি ব্যবসায়ীকে সে জন্য অভিনন্দন জানাই।’’
উৎসব: আসানসোলের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধন করার পরে অনুষ্ঠান বর্ধমানের মিষ্টি হাবে। শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র।
মুরগি পালনে সাহায্য
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বাসিন্দাদের জানান, তাঁরা উদ্যোগী হলে বাইরের রাজ্য থেকে ডিম আনতে হবে না। ব্যক্তিগত ভাবে বাড়িতে পোলট্রি ফার্ম করার জন্য বিডিও বা পঞ্চায়েত সমিতিকে জানালে বিনা পয়সায় ১০টি করে হাঁস অথবা মুরগির ছানা দেওয়া হবে। স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীগুলি পাবে ১০০ থেকে ২৫০ হাঁস, মুরগির ছানা। বিষয়টি নিয়ে পোলট্রি ফাউন্ডেশনের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে। বড় সংস্থা হলে কুড়ি হাজার থেকে এক লাখ ছানা দেওয়া হবে। জেলা পরিষদও ফার্ম তৈরি করতে পারে বলে জানান মমতা।