ফাইল চিত্র।
প্রায় আড়াই বছর হয়ে গেল, সরকারি সিদ্ধান্তে রাজ্য সরকারের দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেডের (ডিপিএল) মালিকানা চলে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের হাতে। কিন্তু লোকসানের ভারে নুইয়ে পড়া সংস্থার পুনরুজ্জীবনের প্রক্রিয়ার অগ্রগতি নিয়ে মঙ্গলবার আসানসোলে তৃণমূলের কর্মী সম্মেলনে যোগ দিয়ে কার্যত অসন্তোষ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি এ দিন বলেন, “ডিপিএল নিয়ে রিস্ট্রাকচারিং চাই। দ্রুত এর সমাধান করে দিন। না হলে, আমার বহু টাকা লাগে ভর্তুকি দিতে। তাকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে দাও। আমরা সাহায্য করব।”
ঘটনাচক্রে, ২০১৮-র শেষে দুর্গাপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ডিপিএল-এর পুনরুজ্জীবনের জন্য উদ্বৃত্ত জমি বিক্রির কথা বলেছিলেন। সরকারি সিদ্ধান্তে ২০১৯-এর ১ জানুয়ারি থেকে ডিপিএল-এর মালিকানা চলে যায় পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের হাতে। ২০২১-এর ৩ জুন ডিপিএল-এর পুনরুজ্জীবন নিয়ে বৈঠকে বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বিক্রির জন্য ডিপিএল-এর জমি চিহ্নিত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সে বছর ৮ জুলাই নবান্নে পূর্তমন্ত্রী মলয় ঘটকের উপস্থিতিতে এ বিষয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ। পরের দিনই পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন, এডিডিএ এবং ডিপিএল-এর আধিকারিকেরা দুর্গাপুরে সংস্থার উদ্বৃত্ত জমি পরিদর্শন করে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। ডিপিএল-এর জমি দখল করে বসবাসকারীরা পুনর্বাসনের দাবি জানান। প্রায় দু’শো একর জায়গা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা কোক-আভেন প্ল্যান্ট ‘কাটিং’ করে সরিয়ে ফেলা হয় জানুয়ারিতে। তবে জমি বিক্রির প্রক্রিয়া এগোনোর কোনও ইঙ্গিত এখনও চোখে পড়েনি বলে অভিযোগ। এ দিন আসানসোলে ডিপিএল-প্রসঙ্গ উত্থাপন করে মুখ্যমন্ত্রী আসলে সে কাজে গতি আনার কথাই বলতে চেয়েছেন বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
ডিপিএল টাউনশিপের ১,৬০৩টি কোয়ার্টার ডিপিএলের কর্মীদের বসবাসের জন্য দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, রয়েছে ১,২০২টি কোয়ার্টার। সেগুলিতে অবৈধ ভাবে বসবাসের অভিযোগও রয়েছে। তাঁদের একাধিক বার নোটিস দেওয়া হলেও উঠে যাননি তাঁরা। ডিপিএল-এর পুনরুজ্জীবন প্রসঙ্গে অবশ্য কিছু বলতে চাননি সংস্থার জনসংযোগ আধিকারিক স্বাগতা মিত্র। অবৈধ ভাবে কোয়ার্টারে বসবাস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “জবরদখলকারীদের উচ্ছেদ করা হবে। বার বার নোটিস দিয়েও কাজ হচ্ছে না। আইনি পদক্ষেপ করা হবে।”