মোবাইলে বক্তব্য রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আউশগ্রামে। ছবি: প্রদীপ মুখোপাধ্যায়।
তিনি যা কথা দিয়েছিলেন, সবই রেখেছেন— মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ভাষণে আউশগ্রামের জনতাকে এমনটাই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার এখানে প্রচারে আসেন তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। গোপীনাথবাটী এলাকায় তাঁর ফোনের মাধ্যমেই মিনিট কুড়ি বক্তৃতা করেন মমতা।
এ দিন মমতা তাঁর হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘‘আপনাদের আশীর্বাদে বেঁচে গিয়েছি। আর এক মিনিট হলে কিংবা আরও কম, ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে হেলিকপ্টার জ্বলে যেত। আমার পায়ে লেগেছে। ভোটের সময়ে আপনাদের কাছে যেতাম। কিন্তু এ বার যেতে পারলাম না, ক্ষমা চাইছি। পাঁচ-সাত দিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে।’’ বর্ধমানের ধান উৎপাদনের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘‘বর্ধমান আমাদের অন্নদাতা। বর্ধমান, বীরভূম আমাকে মায়ের কথা মনে করিয়ে দিল। আপনাদের ভালবাসায় আমি আরও কাজে এগিয়ে যাব।’’ স্কুল পড়ুয়াদের জুতো দেওয়া চালুর পিছনে আউশগ্রামের ঘটনাও এ দিন স্মরণ করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘এক বার আউশগ্রাম দিয়ে আসছিলাম, তখন দেখি স্কুলের ছাত্রেরা খালি পায়ে হেঁটে আসছে। তাদের পায়ে জুতো নেই। সঙ্গে সঙ্গে এসে নির্দেশ দিলাম।’’ জনতাকে তাঁর আর্জি, ‘‘আমি চাই, মেয়েরা নিজের পায়ে দাঁড়াক। মেয়েদের তাড়াতাড়ি বিয়ে দেবেন না। আপনারা আমাদের পরিবার।’’
বক্তৃতায় বিজেপি এবং সিপিএমকে আক্রমণ করেন মমতা। সিপিএমের বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগ তোলেন তিনি। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ, ‘‘বিজেপির আমলে দাম বাড়ছে। বিজেপি শুধু গ্যাসের দাম বারোশো টাকা করেছে। মানুষ খাবে কী? আজ টোম্যাটোর দাম ১৫০ টাকা। এগুলো তো কেন্দ্রের অধীনে। পেট্রলের দাম, সারের দাম বেড়েছে। বীজের দাম বেড়েছে। ভোটের পরে ডবল ইঞ্জিন ফুটো হয়ে যায়।’’ একশো দিনের কাজের বকেয়া মজুরির টাকা আদায় করে আনবেন বলেও প্রতিশ্রুতি তাঁর।
অরূপ বিশ্বাস এ দিন আউশগ্রামের দিগনগর থেকে মালিদাপাড়া পর্যন্ত রোড-শো করেন। আদিবাসী নৃত্য, ডিজে, বাজনার আয়োজন ছিল। তার পরে চাঁদনি জলটুঙি দেখেন ও গোপীনাথবাটী বাসস্টপে সভা করেন। অরূপের দাবি, ‘‘আট হাজার কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এলেও কিছু হবে না। মানুষ উন্নয়নের দিকেই ভোট দেবেন।’’