ওমর আবদুল্লা। —ফাইল চিত্র।
২০১৮ সালের পরে প্রথম নির্বাচিত সরকার পেয়েছে জম্মু-কাশ্মীর। দীর্ঘদিন পরে ক্ষমতার কেন্দ্রে ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা। কিন্তু তাঁর মতে, এ হল হাত বেঁধে ক্ষমতায় আসা।
লোকসভায় বারামুলা কেন্দ্র থেকে ভোটে হেরেছেন ওমর। কিন্তু বিধানসভা ভোটে বডগাম ও গান্ডেরবাল, দুই কেন্দ্র থেকেই জিতেছেন তিনি। ন্যাশনাল কনফারেন্স ও কংগ্রেসের জোট যে সরকার গড়বে তার মুখ্যমন্ত্রী ওমরই হবেন বলে ঘোষণা করে দিয়েছেন তাঁর বাবা তথা প্রবীণ ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লা।
ওমরের কথায়, ‘‘২০১৮ সালের পরে কাশ্মীরে নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসবে। বিজেপি কাশ্মীরের রাজনৈতিক দল বিশেষত ন্যাশনাল কনফারেন্সকে নিশানা করেছিল। আমাদের দুর্বল করার চেষ্টার পাশাপাশি আমাদের বিরুদ্ধে দলও তৈরি করার চেষ্টা করেছে তারা।কিন্তু সেই দলগুলি এই নির্বাচনেধাক্কা খেয়েছে।’’
এর আগে ওমর যখন মুখ্যমন্ত্রী পদে ছিলেন তখন জম্মু-কাশ্মীর ছিল রাজ্য। পুলিশ, আমলাদের মোতায়েন করার দায়িত্ব ছিল রাজ্যেরই হাতে। কিন্তু এখন জম্মু-কাশ্মীর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। ফলে পুলিশ ও আমলাদের মোতায়েন করার ক্ষমতা থাকবে উপরাজ্যপালের হাতে।
ওমর বলেছেন, ‘‘এটা হাত বেঁধে ক্ষমতায় ফেরত আসার মতো। তবে প্রধানমন্ত্রী সম্মানজনক ব্যক্তি। আমার ধারণা তিনি জম্মু-কাশ্মীরকেরাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেবেন। কারণ আমার মনে পড়ছে না কোথাও তিনি বলেছেন যে, জম্মু-কাশ্মীরবাসী বিজেপিকে ভোট না দিলে তাঁদের শাস্তি দেওয়া হবে।’’ মুখ্যমন্ত্রী পদ প্রসঙ্গে ওমরের বক্তব্য, জোটসঙ্গীরা মিলে সিদ্ধান্ত নেবে।
জম্মু-কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন বিজেপি নেতা রাম মাধব। কিন্তু সেইসঙ্গে সতর্কবাণীও শুনিয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘৫-১০ বছরে কাশ্মীর অনেক বদলেছে। এখন সন্ত্রাসের বদলে কাশ্মীরের পরিচয় শান্তিপূর্ণ রাজ্য হিসেবে। সেটা খুব বড় সাফল্য। তাই যাঁরা রাজ্যে ক্ষমতায় থাকবেন তাঁদের বোঝানো উচিত যে, সন্ত্রাসের প্রবণতাকে তাঁরা ফিরিয়ে আনবেন না। তবেই রাজ্যের মর্যাদা ফেরানো সম্ভব।’’
রামের কথায়, ‘‘অনেকেই জঙ্গিদের মুক্তি চাইছেন। ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ ফের কার্যকর করতে বলছেন। এগুলি জাতীয় নিরাপত্তার পক্ষে ক্ষতিকর।’’ তবে আমরাচাই জম্মু-কাশ্মীর দ্রুত রাজ্যেরমর্যাদা পাক।’’
পাশাপাশি জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায় পাঁচ জন বিধায়ককে মনোনীত করারও বিরোধিতা করেছেন ওমর। জম্মু-কাশ্মীরের বিধি অনুযায়ী, পাঁচ জন বিধায়ককে মনোনীত করার অধিকার রয়েছে কেন্দ্র তথা উপরাজ্যপালের। সে ক্ষেত্রে বিধানসভার সদস্য সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৯৫ জনে। ওমরের বক্তব্য, ‘‘আমার মতে, বিজেপি থেকে পাঁচ জনকে মনোনীত করার প্রয়োজন নেই। কারণ, পাঁচ জনে সরকার বদলাবে না। বিরোধী আসনে বসার জন্য অকারণে পাঁচ জনকে বিধানসভায় মনোনীত করা হবে।’’
পাঁচ জনকে মনোনীত করা হলে তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারেন বলেও জানিয়েছেন ওমর। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এ ক্ষেত্রে গোড়া থেকেই কেন্দ্রের সঙ্গে আমাদের টানাপড়েন শুরু হবে। এখন এই সম্পর্ক গঠন করা প্রয়োজন।’’