টেস্টে অনুত্তীর্ণ, ‘তাণ্ডব’ ছাত্রীদের

এ দিনই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের ফর্ম পূরণ করার দিন ছিল। বিক্ষোভ-গোলমালের জেরে তা হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেমারি শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:৩৯
Share:

ছড়িয়ে রয়েছে ইট। নিজস্ব চিত্র

২৪৬ জনের মধ্যে অনুত্তীর্ণ ১১০ জন। তার মধ্যে একটি সেকশনে ৭৭ জনের মধ্যে পাশ করেছে মাত্র ছ’জন।

Advertisement

মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষায় এই ফলাফল দেখে কান্নার রোল ওঠে স্কুলের ‘সি সেকশনে’র ছাত্রীদের। একে একে জড়ো হয় অন্য সেকশনের অনুত্তীর্ণ ছাত্রীরাও। প্রধান শিক্ষিকা নীলিমা ভট্টাচার্যের কাছে প্রতিটি বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বর আলাদা ভাবে জানতে চাওয়া হয়। কেউ কেউ খাতা দেখানোর দাবিও করে। প্রধান শিক্ষিকা কোনও দাবিতেই সায় না দেওয়ায় শুরু হয় গোলমাল।

বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটে থেকে পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রসিকলাল স্মৃতি বালিকা বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকার ঘরের সামনে বসে পড়ে ছাত্রীরা। অভিযোগ, স্কুলের ফুলের টব ভাঙচুর করা হয়। ইট ছোড়া হয় প্রধান শিক্ষিকার ঘরে। বিকেলে মেমারি থানা থেকে মহিলা পুলিশ এসেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। পৌনে ৬টা নাগাদ আসেন স্কুল পরিদর্শক (‌মেমারি শহর) ভজন ঘোষ ও মেমারির পুরপ্রধান স্বপন বিষয়ী। দীর্ঘ আলোচনার পরে, প্রধান শিক্ষিকা ঘোষণা করেন, “সবাইকে টেস্ট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করা হল। কারও মাধ্যমিকে বসতে বাধা নেই।’’

Advertisement

এ দিনই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের ফর্ম পূরণ করার দিন ছিল। বিক্ষোভ-গোলমালের জেরে তা হয়নি। তাঁদের জন্য ফর্ম পূরণের নতুন দিনও ঘোষণা করা হয়।

বৈঠকের শেষে নীলিমাদেবী বলেন, “আমরা কোনও বারই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের আটকাই না। কিন্তু এ বার এত ফেল করেছে, যে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। এরা প্রত্যেকেই নবম শ্রেণিতে দু’-তিনবার করে রয়ে গিয়েছিল।’’ তাঁর দাবি, ‘‘অনুত্তীর্ণ ছাত্রীদের অভিভাবকদের মুচলেকা নেওয়ার কথা ভেবেছিলাম। যাতে টেস্টের পরে ভাল করে পরীক্ষা দিয়ে মাধ্যমিকে বসতে পারে। কিন্তু সে সুযোগ দিল কই!”

স্কুল সুত্রে জানা যায়, ২৪৬ জন ছাত্রী টেস্ট পরীক্ষায় বসেছিল। তার মধ্যে ১১০ জন ছাত্রী অনুত্তীর্ণ হয়। এই ১১০ জনের মধ্যে আবার সি-সেকশনেরই ৭১ জন ছাত্রী রয়েছে। ওই সব ছাত্রীদের অভিযোগ, “সকাল ১০টা থেকে আমাদের বসিয়ে রাখে। বেলা ২টো ১০ মিনিট নাগাদ ফল টাঙানো হয়। সেই ফলে কে, কোন বিষয়ে, কত নম্বর পেয়েছে লেখা নেই। প্রধান শিক্ষিকার কাছে জানতে গেলে তিনি আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। ফলে, সবাই রেগে যায়।’’ উচ্চমাধ্যমিকের ফর্ম পূরণ করতে আসা ছাত্রীদেরও অভিযোগ, “ফর্ম পূরণের জন্যে আমাদের স্কুল ৬৫০ টাকা নিচ্ছে। অথচ অন্য স্কুল ৩৫০-৪০০ টাকা নিচ্ছে। এ নিয়ে জানতে চাইলে আমাদের স্কুলের বাইরে বের করে গেট লাগিয়ে দেওয়া হয়।’’ যদিও তা নিয়ে মুখ খোলেননি প্রধান শিক্ষিকা। অনেক শিক্ষিকা সাড়ে ৩টে বাজতেই স্কুল থেকে চলে যান বলেও অভিযোগ শিক্ষিকাদের একাংশের।

জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) শ্রীধর প্রামাণিক, ‘‘পাশ-ফেল পুরোটাই স্কুলের ব্যাপার।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement