মন্দার বাজারে

ক্রেতার দেখা কম, হতাশ ব্যবসায়ীরা

কিন্তু অন্য বছর যেমন রমরমা থাকে, এ বার সেটা এখনও নেই, দাবি বেশিরভাগ ব্যবসায়ীরই। হাতে থাকা বাকি সময়টুকুতে ভাল বিক্রি হলেও ঘাটতি মিটবে কি না, সংশয়ে রয়েছেন তাঁরা।

Advertisement

সুশান্ত বণিক

আসানসোল শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:২২
Share:

আসানসোল বাজারে। নিজস্ব চিত্র

আর দু’সপ্তাহও বাকি নেই পুজো আসতে। মাঝে ছুটির দিন রয়েছে গোটা তিনেক। প্রতি বছর এই সময়ে গমগম করে আসানসোল, বার্নপুর থেকে রানিগঞ্জ, দুর্গাপুরের বাজার। এ বারও পুজোর বাজার করতে বেরিয়ে পড়েছেন জেলার নানা প্রান্তের বাসিন্দারা। বছরের এই সময়টার দিকে তাকিয়ে থাকেন ব্যবসায়ীরাও। কিন্তু অন্য বছর যেমন রমরমা থাকে, এ বার সেটা এখনও নেই, দাবি বেশিরভাগ ব্যবসায়ীরই। হাতে থাকা বাকি সময়টুকুতে ভাল বিক্রি হলেও ঘাটতি মিটবে কি না, সংশয়ে রয়েছেন তাঁরা।

Advertisement

কুলটি, বরাকর থেকে জামুড়িয়া, জেলার নানা এলাকার বহু বাসিন্দা পুজোর কেনাকাটা করেন আসানসোল বাজার থেকে। ইস্কো কারখানার কর্মীদের অনেকেই বার্নপুর বাজারের উপরে নির্ভর করেন। বরাকর ও নিয়ামতপুরের বাজারে স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকে তো বটেই, লাগোয়া রাজ্য ঝাড়খণ্ডের অনেকেও আসেন কেনাকাটা করতে। সম্প্রতি এই বাজারগুলি ঘুরে দেখা যায়, কমবেশি ক্রেতার আনাগোনা রয়েছে সব ক’টিতেই।

কিন্তু বিক্রিবাটা কেমন হচ্ছে, সেই প্রশ্ন শুনে হাসি নেই ব্যবসায়ীদের মুখে। তাঁদের অনেকের দাবি, সকাল থেকে পসরা সাজিয়ে বসেও বিক্রি তেমন হচ্ছে না। আসানসোলের একটি বড় বস্ত্র বিপণির কর্ণধার বিমল মেহারিয়ার কথায়, ‘‘হাতে আর মাত্র কয়েকটা দিন। কিন্তু বাজার এখনও সে ভাবে জমেনি।’’ সম্প্রতি রানিগঞ্জেও বিপণির একটি শাখা খুলেছেন। ক্রেতাদের পুজোর কেনাকাটায় উৎসাহ দিতে প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজনও করেছেন। তবু সে ভাবে বাজার জমছে না দাবি করে বিমলবাবু বলেন, ‘‘গত বারের তুলনায় এখনও পর্যন্ত ২০ শতাংশ কম বিক্রি হয়েছে।’’

Advertisement

বার্নপুর স্টেশন রোডে বহুতল বস্ত্র বিপণির কর্তা ভক্ত দত্ত বলেন, ‘‘প্রচুর জামাকাপড় মজুত করেছি। কিন্তু ক্রেতা কোথায়? গত বারের থেকে বিক্রি অনেকটাই কম।’’ একই দাবি বিভিন্ন শপিংমলের ব্যবসায়ীদেরও। আসানসোলের সৃষ্টিনগরের একটি শপিংমলের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘লোকজন ভিড় করছেন, কিন্তু কেনাকাটা করছেন কম।’’ একই রকম অবস্থা নিয়ামতপুর ও বরাকর বাজারে। বস্ত্র ব্যবসায়ী রামমোহন ভড়ের বক্তব্য, ‘‘এই অঞ্চলে পরপর শিল্প সংস্থা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। গত কয়েক বছরে ঝাড়খণ্ড থেকে আসা ক্রেতার সংখ্যাও অনেকটা কমেছে। এ বার বিক্রি প্রায় ৩০ শতাংশ কমে গিয়েছে। এটা পূরণ করা কঠিন।’’

এই পরিস্থিতির জন্য ব্যবসায়ীদের অনেকে দায়ী করছেন দেশের সামগ্রিক আর্থিক পরিস্থিতিকেই। তাঁদের দাবি, কেন্দ্র কখন কী ধরনের সিদ্ধান্ত নেবে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত না হওয়ার কারণে ক্রেতারা সহজে খরচ করতে চাইছেন না। তবে শিল্পাঞ্চলের ব্যবসায়ীদের অবশ্য আশা, ইস্কো, ইসিএল এবং রেলের কর্মীরা বোনাস পেয়ে গেলেই বাজার খানিকটা চাঙ্গা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement