বিজেপির মিছিলে অস্ত্র রাখার নালিশ তৃণমূলের

এক দিনে মনোনয়ন পাঁচের

বেলা ১১টা নাগাদ পার্কাস রোড থেকে মিছিল করে সিপিএমের বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভার প্রার্থী আভাস রায়চৌধুরি ও বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের প্রার্থী ঈশ্বরচন্দ্র দাস কার্জন গেটে এসে পৌঁছন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৯ ০২:৫০
Share:

লড়াই: বাঁ দিক থেকে, সিপিএমের আভাস রায় চৌধুরী ও ঈশ্বরচন্দ্র দাস। বিজেপির পরেশচন্দ্র দাস। তৃণমূলের মমতাজ সংঘমিতা ও সুনীল মণ্ড। নিজস্ব চিত্র

তৃণমূলের দু’জন, সিপিএমের দু’জন ও বিজেপির এক জন—দুই লোকসভা কেন্দ্রের পাঁচ প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিলেন শুক্রবার। এ দিনই বিজেপির কর্মীরা আগ্নেয়াস্ত্র, টাঙি নিয়ে মনোনয়ন জমা দিতে জেলাশাসকের দফতরে এসেছিলেন বলেও অভিযোগ করেছে তৃণমূল। বিজেপি যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

Advertisement

বেলা ১১টা নাগাদ পার্কাস রোড থেকে মিছিল করে সিপিএমের বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভার প্রার্থী আভাস রায়চৌধুরি ও বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের প্রার্থী ঈশ্বরচন্দ্র দাস কার্জন গেটে এসে পৌঁছন। কার্জন গেটের মুখে মিছিল আটকে নির্বাচন কমিশনের নিয়ম মেনে ১০ জনকে মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্যে জেলাশাসক দফতরে যাওয়ার অনুমতি দেয় পুলিশ। প্রার্থীদের সঙ্গে ছিলেন নির্বাচন কমিশনের কর্মীরা।

বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের জন্যে মনোনয়ন জমা নেওয়া হচ্ছে জেলাশাসকের দফতরে। আর বর্ধমান পূর্ব লোকসভার জন্যে অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) মনোনয়ন জমা নিচ্ছেন। এ দিন আভাসবাবু বলেন, “এক দিকে শিল্পাঞ্চলে কাজ নেই। অন্য দিকে কৃষি এলাকাতেও চাষিদের অবস্থা খারাপ। রুটি-রুজির প্রশ্নে আমাদের আন্দোলন চলছে।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কী ভাবে ছাত্রদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে, সেটা অজানা নয়। কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়েও পরিকাঠামো গড়ে ওঠেনি।’’ ঈশ্বরবাবুও এক সুরে বলেন, “কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের নীতির জন্যে মানুষ যন্ত্রনায়। ভয়মুক্ত পরিবেশে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছি।’’

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ বর্ধমান স্টেশন থেকে ঢোল-ব্যান্ড নিয়ে মিছিল করে কার্জন গেটে আসে বিজেপি। সঙ্গে গলায় একগুচ্ছ মালা নিয়ে ছিলেন বর্ধমান পূর্ব লোকসভার প্রার্থী পরেশচন্দ্র দাস। এ বার আর মিছিল কার্জন গেটে আটকায়নি। মিছিল গিয়ে দাঁড়ায় জেলাশাসক দফতরে নেতাজি মূর্তির কাছে। পুলিশ দড়ি দিয়ে ব্যারিকেড করে দেয়। তৃণমূলের অভিযোগ, ওই মিছিলে অনেকের হাতেই অস্ত্রশস্ত্র ছিল। এমনকী, কারও কারও কোমরেও আগ্নেয়াস্ত্র গোঁজা ছিল। এ দিনই তৃণমূলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ এ নিয়ে জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানান। একই সঙ্গে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবি জানান। স্বপনবাবুর অভিযোগ, “মুখে গণতন্ত্র রক্ষা করার কথা বলবে আর বাস্তবে গণতন্ত্র হত্যার জন্যে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঘুরছে! এ সব ভয় দেখানোর চেষ্টা।’’ পরেশবাবুর অবশ্য দাবি, “বিজেপিকে ভয় পাচ্ছে, তাই মিথ্যা অভিযোগ করে দমাতে চাইছে।’’ নির্বাচন কমিশন অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।

বেলা দু’টো নাগাদ আদিবাসী নৃত্যের মাধ্যমে তৃণমূলের মিছিল এসে পৌঁছয় কার্জন গেটে। কোনও রকম বাধা ছাড়াই দফতরের কাছে চলে যায় মিছিলটি। হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। রেগে যান জেলা সভাপতিও। কার্যত নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অগ্রাহ্য করে তৃণমূলের কর্মীরা জেলাশাসকের দফতরের সামনে রাস্তায় ঢুকে পড়েন। অনেক নেতা ভিতরে ঢুকে নীল-সাদা কাপড়ে মোড়া চেয়ারেও বসে পড়েন। মনোনয়ন শেষে বর্ধমান দুর্গাপুরের তৃণমূল প্রার্থী মমতাজ সংঘমিতা বলেন, “বিজেপিকে হারানোর কেন প্রয়োজন সেই ব্যাখা যেমন দিচ্ছি, তেমনি আমাদের সংসদের পাঠানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হচ্ছে।’’ বর্ধমান পূর্ব লোকসভার প্রার্থী সুনীল মণ্ডল বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নই আমাদের জয়ের পথে নিয়ে যাচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement