‘নেটওয়ার্ক’ তৈরিতেই জোর দুই নতুন প্রার্থীর

রণজিৎবাবু জাতীয় কংগ্রেসের রিসার্চ বিভাগের সাধারণ সম্পাদক। বর্ধমানে প্রচারে নেমেই দলের জেলা সভাপতি (বর্ধমান গ্রামীণ) আভাস ভট্টাচার্যকে তিনি জানান, বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভা এলাকার মধ্যে সাড়ে চারটি কৃষিভিত্তিক।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৯ ০৬:৫৯
Share:

বাঁ দিকে, প্রচারে রণজিৎ। ডান দিকে, বৈঠকে সিদ্ধার্থ। নিজস্ব চিত্র

তাঁর ‘লড়াই’য়ে শামিল হতে দিতে হবে একটি মিসড্‌ কল— প্রচার করছেন প্রার্থী। বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের এ বারের কংগ্রেস প্রার্থী রণজিৎ মুখোপাধ্যায়ের প্রচারে দেওয়া ওই নম্বরে মিসড্‌ কল দিলেই একটি ফর্ম মিলবে। দলের কোন স্তরের কর্মী হিসাবে কাজ করতে চান, জানতে চাওয়া হচ্ছে সেই ফর্মে। ফর্ম পূরণ করে কেউ ফেরত না পাঠালেও অসুবিধা নেই। কারণ, এর মাধ্যমেই কোন এলাকায় কত জন দলের ব্যাপারে আগ্রহী, সেই তথ্য তাঁদের কাছে পৌঁছে যাবে বলে মনে করছেন রণজিৎবাবু। এ বার বর্ধমানের দুই কেন্দ্রে কংগ্রেসের নতুন দুই প্রার্থী জোর দিচ্ছেন ‘নেটওয়ার্ক’ তৈরিতেই।

Advertisement

রণজিৎবাবু জাতীয় কংগ্রেসের রিসার্চ বিভাগের সাধারণ সম্পাদক। বর্ধমানে প্রচারে নেমেই দলের জেলা সভাপতি (বর্ধমান গ্রামীণ) আভাস ভট্টাচার্যকে তিনি জানান, বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভা এলাকার মধ্যে সাড়ে চারটি কৃষিভিত্তিক। বাকিটা শিল্পাঞ্চল। তাঁর মতে, কৃষি-শিল্প দু’টিই ধুঁকছে। তাই কৃষকদের সঙ্গে যেমন বসতে হবে, তেমনই ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াদের সঙ্গেও কথা বলতে হবে।

বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী সিদ্ধার্থ মজুমদার আবার বলেন, ‘‘কালনা-কাটোয়ায় ঘুরে আমার মনে হয়েছে, কংগ্রেসের ভোটার রয়েছেন। কিন্তু কংগ্রেসের হয়ে বলার কেউ নেই। এই ‘নেটওয়ার্ক’টা তৈরি করতে হবে।’’ তাঁর মতে, কৃষক, মহিলাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তিনি দাবি করেন, এ রাজ্যে মহিলারা নানা কারণে ভয়ে আছেন। তা কাটাতে পারলে কংগ্রেসের কাজ অনেক সহজ হয়ে যাবে।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

তবে কাজটা একেবারেই সহজ নয়, মনে করছেন দুই প্রার্থীই। সে জন্যই ছোট-ছোট ভাগে নানা স্তরের মানুষের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাইছেন তাঁরা। যে ভাবে কংগ্রেস সারা দেশে ১৭৪টি পরামর্শদাতা-সংস্থার মাধ্যমে রিসার্চ টিম কাজ করেছে, নানা ধরনের মানুষের সঙ্গে কথা বলে ইস্তেহার তৈরি করা হয়েছে, সেই ভাবেই তাঁরা কথা বলতে চান। একই সঙ্গে ওই সব স্তরের মানুষের সঙ্গে কথা বলার জন্য প্রশিক্ষিত-কর্মী তৈরি করাও তাঁদের লক্ষ্য।

রণজিৎবাবুর দাবি, “এ রাজ্যে বড় শিল্পের সম্ভাবনা নেই। ক্ষুদ্র শিল্পের উপরে জোর দিতে হবে, তা না হলে এই সব ইঞ্জিনিয়ার পড়ুয়াদের কর্মসংস্থান হবে না। কংগ্রেস কী ভাবে ক্ষুদ্র শিল্প গড়তে চায়, রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পগুলিকে বাঁচিয়ে কী ভাবে কর্মসংস্থান তৈরি করবে— সেটাই আমরা জানাব। তেমনই ব্যবসার জন্য প্রথম তিন বছর কোনও রকম লাইসেন্স লাগবে না বলে দল আশ্বাস দিয়েছে। তাতে কর্মহীনেরা কী ভাবে উপকৃত হবেন, সেটাও তুলে ধরব।’’

সিদ্ধার্থবাবুর মতে, ‘‘কৃষকদের সবচেয়ে বড় সমস্যা ফড়ে-রাজ। সাংসদ তহবিল বা পঞ্চায়েত থেকে শুধু চাষিদের ফসল মাঠ থেকে কিসান মান্ডি বা স্থানীয় বাজারে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করলেই দেখা যাবে এই সমস্যা অনেকটা কেটে গিয়েছে।’’ ন্যূনতম আয় যোজনা (ন্যায়) নিয়ে রণজিৎবাবুর বক্তব্য, “নরওয়ে, সুইডেন, ডেনমার্ক, সুইৎজারল্যান্ডের মতো দেশে এই প্রকল্প রয়েছে। প্রথম ধাপে আমরা ন্যূনতম আয়ের জন্য সাহায্য করছি। দ্বিতীয় ধাপে পরিবারগুলিকে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ দু’টি ক্ষেত্রেও উন্নীত করা হবে।’’

বিজেপির বর্ধমান-দুর্গাপুরের জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দীর অবশ্য দাবি, ‘‘কংগ্রেসের এ সব প্রতিশ্রুতি দেওয়াই সার। মানুষ আর ওঁদের সঙ্গে নেই।’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement