মন্দিরে একটিই প্রতিমা, চলছে রং করার কাজ। নিজস্ব চিত্র
এক মন্দিরে দুই প্রতিমা নিয়ে বিতর্ক চলছিলই। এ বার সাংবাদিক বৈঠক করে দলের বিধায়ক তথা পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন কাটোয়ার এক কাউন্সিলর শ্যামল ঠাকুর।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দলের জেলা সহ-সভাপতি কাঞ্চন মুখোপাধ্যায়কে পাশে নিয়ে নিজেকে সার্কাস ময়দান নাগরিক কল্যাণ সর্বজনীন দুর্গাপুজোর সম্পাদক দাবি করে তিনি বলেন, ‘‘আমাকে হেয় করার জন্যই বিধায়কের নির্দেশে একটি কমিটি গঠন করে প্রশাসনের কাছে অনুমতি চায়। আমিও প্রশাসনের কাছে পুজোর অনুমতি চেয়েছি। এখনও অনুমতি দেওয়া শুরু হয়নি। অথচ, সোমবার রাতে বিধায়কের দলবল মন্দির থেকে আমাদের প্রতিমা বের করে পালবাড়িতে নামিয়ে দিয়ে আসে।’’ এ দিন কাটোয়ার মহকুমাশাসক ও দলের সভাপতি স্বপন দেবনাথকেও বিষয়টি জানিয়েছে, দাবি তাঁর।
যদিও পাল্টা বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘আমি কোনও পুজো কমিটির সঙ্গে যুক্ত নেই। কমিটির বেশির ভাগ সদস্য ওঁর বিরুদ্ধে। মহামান্য উচ্চ আদালতের নির্দেশে গতবারের কমিটিই এ বার পুজো করছে। আমার নামে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে আদতে ওরাই দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে।’’
কয়েকদিন ধরেই কাটোয়ার চার নম্বর ওয়ার্ডের ওই মন্দিরে দুই প্রতিমা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। কারা অনুমতি পাবে, সে নিয়েও উত্তেজনা ছিল। তার মধ্যেই শ্যামল ঠাকুর ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের প্রতিমাটি বেদি থেকে সরিয়ে মন্দিরের অন্যত্র মুখ ‘ঘুরিয়ে’ রেখে দেওয়া হয়। অন্য মূর্তিতে শুরু হয় অঙ্গরাগের কাজ। এ বার ওই মূর্তিটি মন্দির থেকে বার করে পালবাড়িতে রেখে আসার অভিযোগ উঠেছে শ্যামলবাবুর বিরোধী পক্ষ বলে পরিচিত শঙ্করীপ্রসাদ ঘোষ, পরিতোষ পালদের বিরুদ্ধে। পরিতোষবাবু এ দিন বলেন, ‘‘প্রতিমা সরানোর কথা বলা হয়েছিল। উনি রাজি হননি। আমাদেরই যা পারি তাই করে নিতে বলেছিলেন। তাই আমরা প্রতিমাটি পালবাড়িতে রেখে এসেছি।’’
জেলা সহ সভাপতি কাঞ্চনবাবুর দাবি, প্রতিমা নিয়ে বিতর্কে দল জড়িয়ে পড়ছে এটা ঠিক নয়। তাঁর দাবি, ‘‘শ্যামল ঠাকুরের নেতৃত্বে বরাবরই পুজো হয়ে এসেছে। সেখানে মন্ত্রীও আসতেন। কিন্তু বিধায়কের মদতপুষ্ট লোকজন মন্দির থেকে প্রতিমা নামিয়ে দিয়েছে। এর মধ্যে বীরত্ব কিছু নেই। এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।’’ জেলা সভাপতি স্বপনবাবু বলেন, ‘‘এর মধ্যে দল একেবারেই জড়িত নয়। ওই কাউন্সিলর যা বলেছেন সবটাই ব্যক্তিগত ভাবে।’’ কোনও গোলমাল যাতে না বাধে, সে জন্য পুলিশকে বিষয়টি নজরে রাখার কথাও বলেন তিনি।