কাজে মগ্ন সিদ্ধার্থ পাল। নিজস্ব চিত্র।
বছর দুয়েক আগেও তাঁর তৈরি বিভিন্ন রকম মূর্তি দেশে-বিদেশে দুর্গোৎসবকে প্রাণবন্ত করেছে। বর্ধমান থেকে আসানসোল, কলকাতা ছাড়িয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এমনকি বেশ কয়েক বার বিদেশেও গিয়েছে তাঁর তৈরি প্রতিমা। তিনি বর্ধমানের শিল্পী সিদ্ধার্থ পাল। কিন্তু করোনা ওলটপালট করে দিয়েছে তাঁর পেশাকে। অতিমারি আবহে বর্ধমানের এই শিল্পীর হাতে নেই মূর্তি তৈরির বায়না। এই পরিস্থিতিতে হতাশা গ্রাস করেছে তাঁকে।
সিদ্ধার্থ জানিয়েছেন, কলকাতার অনেক নামকরা সংস্থার পুজো মণ্ডপের প্রতিমা এবং মূর্তি বানিয়েছেন তিনি। কিন্তু করোনার তৃতীয় ঢেউ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ায় বেশি বাজেটের মূর্তি গড়ার ঝুঁকি নিচ্ছেন না পুজো উদ্যোগতারা। তাই গত বছর কিছু বরাত পেলেও এ বছর এখনও কোনও বরাত আসেনি বলে জানিয়েছেন সিদ্ধার্থ। তিনি বলেছেন, ‘‘ছাঁচের মূর্তি ছাড়া এ বছর কোনও বরাত নেই।’’ কিন্তু মাটির পাশাপাশি ফাইবার, ব্রোঞ্জেরও মূর্তি বানান তিনি। কিন্তু সে সব বানানোর সুযোগ এ বার এখনও আসেনি। তিনি বলেছেন, ‘‘আমার কাজ মুম্বই, সিকিম, আমেরিকা, নরওয়েতে সমাদৃত হয়েছে। কিন্তু পুজো আর তিন মাস বাকি। এখনও কোনও বায়না নেই। এর পর বড় কাজ করার সময়ও থাকবে না।’’ ছাঁচের প্রতিমার বাইরে এই ধরনের মূর্তি তৈরিতে সময় বেশি লাগে বলেও জানিয়েছেন সিদ্ধার্থ।
পুজোয় বরাত না আসা মানে সারা বছরের রোজগারে ধাক্কা খাবে। অতিমারিতে কী করে দিন চলছে তাঁর? এ ব্যাপারে বর্ধমানের শিল্পী বলছেন, ‘‘কোনও রকম ভাবে দিন চলে যাচ্ছে। ছবি আঁকা শেখাচ্ছি। বড় দুর্গামূর্তির বরাতও নেই। অন্যান্য ছোটো ছোটো কাজের অর্ডার যেটুকু পাচ্ছি, তাই দিয়েই চলছে।’’ অন্যবছর এই সময় দম ফেলার ফুরসত থাকে না বলে জানিয়েছেন সিদ্ধার্থ। কিন্তু এ বছর তাঁর হাত কার্যত খালি।