মিছিল শেষে আজ বড় সমাবেশের আশায় বাম

একশো কিলোমিটার রাস্তা হাঁটা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তার পরেও ক্লান্তি নেই কর্মী-সমর্থকদের— পুর পরিষেবা ও শিল্প পরিস্থিতি নিয়ে অভিযোগ তুলে রাস্তায় নামা ১৩টি বাম সংগঠনের যৌথ মঞ্চের এমনই দাবি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৬ ০০:০০
Share:

পদযাত্রার শেষ দিন। দুর্গাপুরের কমলপুরে রবিবার বিশ্বনাথ মশানের তোলা ছবি।

একশো কিলোমিটার রাস্তা হাঁটা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তার পরেও ক্লান্তি নেই কর্মী-সমর্থকদের— পুর পরিষেবা ও শিল্প পরিস্থিতি নিয়ে অভিযোগ তুলে রাস্তায় নামা ১৩টি বাম সংগঠনের যৌথ মঞ্চের এমনই দাবি। আজ, সোমবার তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার সামনে শহরবাসী সমবেত হয়ে বেহাল পুর পরিষেবার বিরুদ্ধে সোচ্চার হবেন বলেও দাবি দুর্গাপুরের ওই সংগঠনের নেতাদের।

Advertisement

মূলত সিপিএমের উদ্যোগে তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে শহর জুড়ে লাগাতার আন্দোলনের জন্য ১৩টি বাম সংগঠনকে নিয়ে যৌথমঞ্চ গড়া হয় ২০১৫ সালের জুনে। বেহাল পুর পরিষেবার অভিযোগে শহর জুড়ে সই সংগ্রহ করে কয়েক হাজার মানুষকে নিয়ে বিধানসভা ভোটের আগে পুরসভার সামনে বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি দেয় তারা। ওই ভোটে দুর্গাপুরের দু’টি আসনই তৃণমূলের হাতছাড়া হয়। আজ, সোমবার ফের পুরসভা অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে।

১৩ নভেম্বর জেমুয়ার পরানগঞ্জ থেকে বামেদের ওই মিছিল শুরু হয়েছে। এমএএমসি টাউনশিপ, বিধাননগর, মুচিপাড়া, সগড়ভাঙা, শ্যামপুর, ডিপিএল কলোনি, ডিভিসি মোড় হয়ে রবিবার পর্যন্ত মোট ১৫টি ওয়ার্ডের ১০৪ কিলোমিটার রাস্তা পরিক্রমা করেছে মিছিলটি। পুরসভার বিরুদ্ধে বেহাল পরিষেবা ও দুর্নীতির অভিযোগের পাশাপাশি শহরের বন্ধ কারখানা খোলা, নতুন কারখানা গড়া, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার দাবিও উঠেছে মিছিলে। আজ, সোমবার বিকালে পুরসভার সামনে সমাবেশ হবে।

Advertisement

সিপিএমের নেতাদের দাবি, গত কয়েক দিনে হাজার-হাজার মানুষ মিছিলে হেঁটেছেন। ‘লং মার্চ’ দেখতে আশপাশের বাড়ি থেকে মানুষ রাস্তায় বেরিয়েছেন। বহু জায়গায় ফুল দিয়ে নেতা-কর্মীদের স্বাগত জানানো হয়েছে। এমনকী, অনেকে বাড়িতে মিছিলে যোগ দেওয়া মানুষের খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আবার কেউ চাল-ডাল দিয়ে সাহায্য করেছেন। ফলে, আজ পুরসভার সামনে সমাবেশে বহু মানুষ জড়ো হবেন বলে আশা সিপিএম নেতাদের।

সিপিএম নেতা তথা সিটুর জেলা সভাপতি বিনয়েন্দ্র কিশোর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মিছিলে হেঁটে দেখেছি, আমাদের দাবিতে শহরের অধিকাংশ মানুষের সমর্থন রয়েছে। বেহাল নাগরিক পরিষেবার পাশাপাশি যে ভাবে একের পর এক কল-কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তাঁরাও।’’ যৌথমঞ্চের আহ্বায়ক তথা সিপিএমের দুর্গাপুর ২ পূর্ব জোনাল কমিটির সম্পাদক পঙ্কজ রায় সরকার জানান, মিছিলে কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে দলের অন্য এলাকার বিধায়ক, প্রাক্তন সাংসদেরাও সামিল হয়েছেন।

বিধানসভা ভোটের আগে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে সই সংগ্রহ করে পুরসভার বিরুদ্ধে জনমত গড়তে সফল হয়েছিল সিপিএম। তৃণমূলের নেতারা বিষয়টিকে আমল না দেওয়ায় ভুগতে হয়েছিল বলে ভোটের ফল বেরনোর পরে অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের অন্দরে। এ বার অবশ্য তারা আর সেই এক ভুল করতে চায় না বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। এই কর্মসূচি থেকে যাতে সিপিএম রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে না পারে সে ব্যাপারে আগেই সাংবাদিক সম্মেলন করে উন্নয়নের ফিরিস্তি দিয়েছিল পুরসভা। ডেপুটি মেয়র অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘সিপিএমের আমলে উন্নয়নের নামে বরো চেয়ারম্যানদের নেওয়া টাকা এখনও ফেরত পায়নি পুরসভা। ওরা আবার দুর্নীতির কথা বলে কী করে!’’

সিপিএমের লং মার্চের পাল্টা হিসেবে ওয়ার্ডে-ওয়ার্ডে পদযাত্রা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল। দুর্গাপুর ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি শরবিন্দু (বিপ্লব) বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমাদের ব্লকে প্রথমে কেন্দ্রীয় ভাবে একটি মিছিল করা হবে। পরে ওয়ার্ড ধরে পদযাত্রা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement