উদ্ধারের পরে। নিজস্ব চিত্র
দেড় বছর আগে, সে যখন খান পাঁচেক মানুষকে পিষে-দলে খুন করে সেনা ছাউনিতে আশ্রয় নিয়েছিল, তখন তার মাথার উপরে ঝুলছে ‘খুনি’র (রোগ) তকমা। কিন্তু পানাগড় বায়ুসেনার জঙ্গলে সেঁদিয়ে যাওয়ার পরে বার সাতেক তাকে ‘খুন’ করার চেষ্টা চালিয়ে ফিরে আসতে হয়েছিল শিকারিদের। কিন্তু গত বছর দেড়েকে খুন তো দূরের কথা, আশপাশের গ্রামে হানা দেওয়ার চেষ্টাও করেনি সে।
সেই খুনে হাতি ‘মিলিটারি’ই বুধবার সেনা ছাউনির বিশ ফুট গভীর এক পরিত্যক্ত কুয়োয় পড়ে মৃত্যুর মুখোমুখি। রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল রবিকান্ত সিংহের গলায় তাই আক্ষেপ, ‘‘হাতিটা শুধরে গিয়েছিল। কুয়োয় পড়ে যাওয়ায় ওকে ধরা গেল হয়তো। বাঁচানো যাবে কি না, তা এখনই বলা মুশকিল।’’
বাঁকুড়া ও বর্ধমান থেকে ঘুমপাড়ানি বিশেষজ্ঞ এসে হাতিটিকে কাবু করার পরে দড়িতে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে ক্রেনে করে তাকে তোলা হয়। তার পর সেনা ছাউনির ঠিকানা থেকে তাকে পাঠানো হয় বাঁকুড়া মেদিনীপুরের ময়ূরঝর্না প্রকল্পের জঙ্গলে। তবে তার আগে, হাতিটির শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করা হবে বলে জানাচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব বনাঞ্চলের মুখ্য বনপাল কল্যাণ দাস।
এই দেড় বছর ধরে সেনা ছাউনিই হয়ে উঠেছিল তার ঘরবাড়ি। বন দফতর সূত্রের দাবি, এলাকায় তার নাম হয়ে গিয়েছিল, ‘মিলিটারি’। এ দিন সেই খুনে মিলিটারি কুয়োয় পড়েছে শুনেই ছুটে গিয়েছিলেন বর্ধমান এবং দুর্গাপুরের বন-কর্তারা। ঘণ্টা চারেকের চেষ্টার পরে তাকে তোলা হয়। তবে বন-কর্তারা জানিয়েছেন, বছর তিরিশের হাতিটির পিছনের পায়ে চোট লেগেছে। তা সামলে উঠতে পারলে তবেই তাকে ছাড়া হবে ময়ূরঝর্নার জঙ্গলে।