কাটোয়ায় বনভোজন। নিজস্ব চিত্র
প্রথম বার মা হতে চলেছেন ওঁরা। তাই মানসিক দুশ্চিন্তা কিছুটা হলেও রয়েছে। অনেক বিষয় সম্পর্কে সন্তানসম্ভবাদের সম্যক জ্ঞান নেই। সোমবার এমনই ৭০ জন অন্তঃসত্ত্বার দুপুরের ভোজনের ব্যবস্থা করেছিলেন কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তার জন্য হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্কের পাশের বাগানে বনভোজনের পরিবেশ তৈরি করা হয়। সন্তানসম্ভবাদের খাওয়ানো হয় পুষ্টিকর খাবার। তাঁদের প্রসব সংক্রান্ত পরীক্ষাও হয়। দেওয়া হয় নানা পরামর্শ। যেসব প্রসূতিরা এ দিন বনভোজনে ছিলেন, তাঁদের অবস্থাকে চিকিৎসা বিজ্ঞান ‘হাইরিস্ক প্রেগন্যান্সি’ বলে, জানাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, “প্রত্যেক মাসের ৯ তারিখে কাটোয়া মহকুমার নানা ব্লক হাসপাতাল ওই ধরনের অন্তঃসত্ত্বাদের স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়। এ মাসে পাঠানো হয়েছিল ৭০ জনকে। কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের এক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘এখন চতুর্দিকে বনভোজন চলছে। তাই বনভোজনের পবিবেশ তৈরি করতে হাসপাতালের বাগান কাপড় দিয়ে সুন্দর করে সাজানো হয়েছিল। পাতা হয়েছিল চেয়ার, টেবিল। সেখানেই খাওয়ানো হয় অন্তঃসত্ত্বাদের।’’ তাঁদের ‘লেবার রুম’ দেখানো হয়। প্রসবের আগে এবং পরে হাসপাতালে কী চিকিৎসা পরিষেবা মেলে, তা জানানো হয়।
প্রসূতিদের আপ্যায়নে ছিলেন খোদ হাসপাতালের সুপার শেখ সৌভিক আলম। কাটোয়ার করুই গ্রাম থেকে এসেছিলেন আজিয়া খাতুন। তিনি বলেন, “আর কিছু দিনের মধ্যেই প্রথম সন্তানের জন্ম দিতে চলেছি। মনে একটা ভীতি রয়েছে। মহকুমা হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করতে এসেছিলাম। জানতে পারি, আমাদের মতো মহিলাদের জন্য বনভোজনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্য সন্তানসম্ভবাদের সঙ্গে গল্প করে ভয় অনেকটা কেটেছে। নানা পদের খাবার খেয়েছি। বেশ ভাল লাগল।”
মঙ্গলকোটের পিণ্ডিরা গ্রামের বাসিন্দা রথি দাস বলেন, “প্রসবের দিন এগিয়ে আসায় মনে ভয় কাজ করছিল। এখানে এসে তা কেটে গিয়েছে। নার্সরা প্রয়োজনীয় সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন আমাদের সঙ্গে। ভয় দূর হয়েছে।” হাসপাতালের সুপার বলেন, “প্রত্যেক মাসেই অন্তঃসত্ত্বাদের এ ভাবেই প্রাক-প্রসবকালীন যাবতীয় স্বাস্থ্যপরীক্ষা করিয়ে সচেতনত করা হয়। পৌষমাস চলায় তাঁদের আনন্দ দিতে বনভোজনের পরিবেশে ওদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা হয়েছিল। ওরা আনন্দ পেয়েছে। আমাদেরও ভাল লেগেছে।”