কাটোয়া স্টেশন চত্বরে ব্যারিকেড দেওয়া হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র
২১টি শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন ঢোকার কথা কাটোয়ায়। সব ঠিক থাকলে, আজ, শনিবার সকাল থেকেই দুই বর্ধমান ও আশপাশের একাধিক জেলার শ্রমিকেরা নামবেন কাটোয়া স্টেশনে। প্রশাসনের দাবি, তাঁদের কাটোয়া বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে এসে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পাশাপাশি, খাবার, জল দেওয়ার পরে নিজ-নিজ এলাকায় পাঠানো হবে। করোনা-সংক্রমণ রুখতে নানা ব্যবস্থাও নিয়েছে প্রশাসন।
শুক্রবার পুরসভা ও পুলিশের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠক করেন মহকুমাশাসক (কাটোয়া) প্রশান্তরাজ শুক্ল। তিনি বলেন, ‘‘কয়েকহাজার শ্রমিককে কাটোয়া বাসস্ট্যান্ডে এনে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর পরে, অবস্থা বুঝে কোয়রান্টিন কেন্দ্র বা হোম কোয়রান্টিনে পাঠানো হবে। সংক্রমণ রোধে যাবতীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’ শহরে যাতে সংক্রমণ না ছড়িয়ে পড়ে তা নিয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে, দাবি তাঁর।
মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া ও বর্ধমান হয়ে কাটোয়া স্টেশনে ৬ ও ৭ নম্বর প্ল্যাটর্ফমে ঢুকবে ট্রেনগুলি। সেখান থেকে ‘ব্যারিকেড’ করে সাত নম্বর প্ল্যাটর্ফমের শেষ প্রান্ত দিয়ে কাটোয়া বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে যাওয়া হবে পরিযায়ীদের। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে তাঁদের বাসস্ট্যান্ডের এক নম্বর গেট দিয়ে ঢুকিয়ে দু’নম্বর গেট দিয়ে অন্যত্র পাঠানো হবে। নাম-ঠিকানা নথিভুক্ত করে আঙুলে কালি লাগিয়ে দেওয়ার পরে, টিফিন দেওয়া ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা হবে। প্রাথমিক ভাবে করোনার উপসর্গ পেলে, সংশ্লিষ্ট এলাকার নিভৃতবাস কেন্দ্র রাখা হবে তাঁদের। না হলে পাঠানো হবে গৃহ নিভৃতবাসে। তবে মহারাষ্ট্র, গুজরাত, দিল্লি, মধ্যপ্রদেশ ও তামিলনাড়ু থেকে আসা শ্রমিকদের আলাদা করে চিহ্নিত করে নিভৃতবাসে পাঠানো হবে।
এ দিন দেখা যায়, পুরো বাসস্ট্যান্ড চত্বর ‘ব্যারিকেড’ দিয়ে ঘেরা হয়েছে। ওই রাস্তা দিয়ে চলাচলও নিয়ন্ত্রণ করা হবে। থাকবে পুলিশও। দুপুর নাগাদ কাটোয়া বাসস্ট্যান্ড চত্বরে গিয়ে সামগ্রিক ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেন মহকুমা প্রশাসনের কর্তারা। জানা গিয়েছে, শ্রমিকদের নাম নথিভুক্ত করা, খাবার পরিবেশন করার জন্য পুরসভার কর্মীদের নামানো হয়েছে। স্বাস্থ্যপরীক্ষা করার জন্য একাধিক মেডিক্যাল দল থাকছে। শ্রমিকদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য রয়েছে ৩৫টি বাস। এর মধ্যে ১২টি বাস সরকারি।
কাটোয়ার পুরসভার প্রশাসক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় জানান, কাটোয়া থেকে দুই বর্ধমান ছাড়াও নদিয়া, মুর্শিদাবাদ ও বীরভূম জেলার নানা প্রান্তের শ্রমিকেরা সহজেই বাড়ি যেতে পারবেন। সমস্ত বিধি মেনে তাঁদের বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।