কালনার বাজারে। নিজস্ব চিত্র
জমায়েত এড়াতে অর্ধেক আড়তদারকে সরানো হয়েছিল অন্যত্র। কিন্তু সেখানে বেচাকেনার উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই, এমনটা দাবি করে ফের বাজারে ফিরে এসেছেন তাঁরা। পূর্ব বর্ধমানের কালনা নিয়ন্ত্রিত বাজারে তাই ভিড় জমছে রীতিমতো। করোনা-সংক্রমণ ঠেকাতে ‘লকডাউন’ চলাকালীন ওই বাজারে এমন ভিড় দেখে তাঁরা আতঙ্কিত বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর অনেকের।
প্রতিদিন সকাল হতেই শহর ঘেঁষা এই পাইকারি বাজারে আশেপাশের প্রায় ২৫টি গ্রামের চাষিরা উৎপাদিত ফসল নিয়ে আসেন। তাঁদের কাছ থেকে আড়তদারেরা তা নিয়ে বিক্রি করেন ব্যবসায়ীদের কাছে। দুপুর পর্যন্ত বাজারে কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করেন।
পাইকারি বাজারে ঢোকার রাস্তার দু’পাশে রয়েছে ৩০ জন আড়তদারের ঘর। সেগুলির সামনে চাষিরা তাঁদের ফসল রাখেন। বৃহস্পতিবার ওই বাজারে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তায় চাষিদের মালপত্র নিয়ে বিক্রির তোড়জোড় চলছে। তা কেনার জন্য এক-একটি আড়তে জড়ো হয়েছেন অনেকে। তাঁদের অনেকেরই মুখে ‘মাস্ক’ নেই। কেউ-কেউ রুমালে মুখ ঢেকে বেরোলেও, বাজারে এসে তা খুলে ফেলেছেন। পারস্পরিক দূরত্ব রাখারও বালাই নেই।
আড়তদারেরা যেখানে বসে চাষিদের আনাজ বিক্রির টাকা দেন, সেখানে নির্দিষ্ট দূরত্বে সাদা দাগ দেওয়া হয়েছিল। অথচ, তা উপেক্ষা করেই অনেক জন এক সঙ্গে আড়তদারের টেবিলের সামনে ভিড় জমাচ্ছেন। এক আড়তদারের কথায়, ‘‘অনেক বারই দূরে-দূরে দাঁড়ানোর কথা বলছি। কেউ শুনছেন, কেউ শুনছেন না।’’ এলাকার কিছু বাসিন্দার দাবি, এই বাজার থেকে প্রচুর শসা সরবরাহ হয় রাজ্যের বেশ কিছু বাজারে। এখন শসা জমি থেকে উঠতে শুরু করেছে। সপ্তাহখানেক পরে প্রতিদিন আরও অনেক চাষি জমি থেকে শসা তুলে বিক্রি করতে আসবেন। তখন কী পরিস্থিতি তৈরি হবে, সে নিয়ে তাঁরা আতঙ্কিত বলে দাবি করেন ওই বাসিন্দারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই বাজারে ছোট জায়গায় যাতে ভিড় না জমে, সে জন্য সম্প্রতি অর্ধেক আড়তদারকে কিছুটা দূরে সরানো হয়। তাতে ভিড় কিছুটা কমেছিল। কিন্তু ওই আড়তদারেরা ফের আগের জায়গায় ফিরে এসেছেন। বাজার কমিটির সভাপতি সাজাহান শেখের দাবি, যেখানে আড়তদারদের সরানো হয়েছিল, সেখানে তেমন পরিকাঠামো নেই। কমিটির সম্পাদক দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি।’’ মহকুমাশাসক (কালনা) সুমনসৌরভ মোহান্তি জানান, কেন ওই বাজারে এখনও ভিড় জমছে, তা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)