ঢাকিদের পুজোয় বাদ তাঁরাই

পুজো এলেই কাঁধে ঢাক নিয়ে কাছে-দূরের মণ্ডপে পাড়ি দেন ওঁরা। ঘরের মানুষটা না থাকায় পুজোয় মন বসে না পরিবারের অন্যদেরও। তবে এ বার বাড়ির লোকেদের আনন্দ যাতে নষ্ট না হয় তার ব্যবস্থা আগেভাগেই করে রাখছেন ঢাকিরা। অন্য মণ্ডপে যাওয়ার আগে পাড়ায় দুর্গাপুজোর আয়োজন করে যাচ্ছেন তাঁরা। 

Advertisement

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

কালনা শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৮ ০৭:১০
Share:

পুজোর আগেই ঢাকে কাঠি কালনার দাসপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র

পুজো এলেই কাঁধে ঢাক নিয়ে কাছে-দূরের মণ্ডপে পাড়ি দেন ওঁরা। ঘরের মানুষটা না থাকায় পুজোয় মন বসে না পরিবারের অন্যদেরও। তবে এ বার বাড়ির লোকেদের আনন্দ যাতে নষ্ট না হয় তার ব্যবস্থা আগেভাগেই করে রাখছেন ঢাকিরা। অন্য মণ্ডপে যাওয়ার আগে পাড়ায় দুর্গাপুজোর আয়োজন করে যাচ্ছেন তাঁরা।

Advertisement

কালনা শহরের সাত নম্বর ওয়ার্ডের দাসপাড়ায় এ বারই প্রথম পুজো হচ্ছে। পাড়ার শ’দেড়েক মানুষের বেশির ভাগই মণ্ডপ তৈরি, তাঁত বোনা, ভ্যান রিকশা চালানোর কাজ করেন। তবে পুজো এলেই ঢাক কাঁধে তাঁরা ছোটেন মুম্বই, দিল্লি, এলাহাবাদ, পুণে, লখনউয়ের মতো এলাকায়। ঢাকিদের সঙ্গে যান কাঁসি বাদকেরাও। ফেরেন সেই লক্ষ্মী পুজোর আগের দিন। নিজেরা কোনও না কোন মণ্ডপে থাকলেও পরিবারের অন্যেরা পুজো ঠিকঠাক দেখতে পেতেন না বলে আফশোস ছিল তাঁদের। এ বার তাই ঠিক করেন, যাওয়ার আগে যাবতীয় যোগাড়করে দিয়ে যাবেন।

এলাকাতেই বাড়ি প্রবীণ মৃৎশিল্পী গোবিন্দ পালের। ঢাকিদের উৎসাহ দেখে পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। প্রতিমা গড়ে দেওয়ার আশ্বাসও দেন। গোবিন্দবাবুর ছেলে সুব্রতর চাঁদমালা-সহ পুজোর নানা সামগ্রীর ব্যবসা রয়েছে। পুজোর যাবতীয় উপাচার সময়ে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। দাসপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, মণ্ডপ তৈরির কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। চাঁদা তোলাও চলছে পুরোদমে। ঢাকিরা জানান, চার দিনই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং নানা প্রতিযোগিতার আয়োজন থাকবে। পাড়ার মহিলা এবং শিশুরা যোগ দেবেন তাতে। এলাহাবাদের একটি পুজোয় এ বার ঢাক বাজাবেন ঝন্টু দাস। তিনি বলেন, ‘‘নিজেরা মণ্ডপে থেকে ঢাক বাজালেও পরিবারের সদস্যরা পুজোয় আনন্দ করতে পারছে না এটা যখনই মনে হত খারাপ লাগত। এ বার ওদের জন্য সব কিছু আয়োজন করে যাচ্ছি।’’ জয়দেব দাস, কালীপদ দাস, সুদর্শন দাস, সুনীল দাসেরাও জানান, এতদিন এলাকায় উৎসব বলতে ছিল কালীপুজো। তাও দুর্গাপুজোর পরে নয়, সেই বৈশাখের শেষ মঙ্গলবার। এ বার ছেলেমেয়েগুলো ঘরের পাশেই আনন্দ করতে পারবে চার দিন।

Advertisement

আক্ষেপ একটাই, ঢাকিদের মণ্ডপে ঢাক বাজাবেন অন্য কেউ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement